প্রিজারভেটিভ,কৃত্রিম ও প্রাকৃতিক প্রিজারভেটিভস,খাদ্য সংরক্ষনে প্রিজারভেটিভসের ভূমিকা

প্রিজারভেটিভ কী?

যেসব পদার্থ খাদ্যের সাথে পরিমিত পরিমাণে মিশিয়ে খাদ্যকে বিভিন্ন অণুজীব (ব্যাকটেরিয়া, ঈস্ট, মােন্ড) এর আক্রমণ থেকে রক্ষা করে তাদেরকে প্রিজারভেটিভস বলে। 

প্রাকৃতিক প্রিজারভেটিভস কী?

প্রাকৃতিক উৎস থেকে প্রাপ্ত যেসব পদার্থ খাদ্য সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে ব্যবহৃত হয় তাদেরকে প্রাকৃতিক খাদ্য সংরক্ষক বা ন্যাচারাল ফুড প্রিজারভেটিভস্ বলে। প্রচলিত প্রাকৃতিক খাদ্য সংরক্ষক হলো লবণ, চিনি, সরিষার তেল, হলুদ, মধু, অ্যালকোহল, ভিনেগার ইত্যাদি।

কৃত্রিম প্রিজারভেটিভস কী?

কৃত্রিম উৎস থেকে প্রাপ্ত যেসব পদার্থ খাদ্য সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে ব্যবহৃত হয় তাদেরকে কৃত্রিম খাদ্য সংরক্ষক বা রাসায়নিক ফুড প্রিজারভেটিভস্ বলে।

খাদ্য সংরক্ষনে প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম প্রিজারভেটিভসের মধ্যে কোনটি অধিক স্বাস্থ্যসমেত? বিশ্লেষণ কর?

প্রাকৃতিক প্রিজারভেটিভসের স্বাস্থ্য ঝুঁকি অতি নগন্য যেমন:

(১) ভিনেগার একটি প্রাকৃতিক প্রিজারভেটিভ যা খাদ্যবস্তুতে ব্যবহারের ফলে খাদ্য দ্রব্যে ভিনেগারের উপস্থিতি খাবারের রুচি বৃদ্ধি করে।

(২) ভিনেগার রক্ত সঞ্চানন বাড়িয়ে দেয়, হজম শক্তি বাড়ায়, শরীরে সৃষ্ট তরল অপদব্য নিঃসরণ সহজ করে দেয়, রক্তের অপ্রয়োজনীয় ও চর্বি বিদূরিত করে শরীরকে স্লিম রাখতে সাহায্য করে।

(৩) ভিনেগার রক্তচাপ ও রক্তের কোলেস্টেরলেরে পরিমাণ হ্রাস করে।

(৪) ভিনেগার সমৃদ্ধ খাবার খেলে ক্যান্সার ও টিউমার প্রতিরোধে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

কৃত্রিম প্রিজারভেটিভসের স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে যেমন:

১. ক্যালসিয়াম প্রোপানয়েটের সামান্য বিষক্রিয়া আছে। এলার্জি জনিত সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তোলে।

২. সোডিয়ামডয়াম বেনজোয়েট এলার্জি সৃষ্টিতে ও মস্তিকে ক্ষতিকর প্রভাব রাখতে পারে। সোডিয়াম বেনজোয়েট এসকোরবিক এর সাথে বিক্রিয়া করে বেনজিন উৎপন্ন করে যা একটি স্বীকৃত কারসিনোজেন (ক্যান্সার উৎপাদক)।

৩. প্যারাবেন কৃত্রিম ইস্ট্রোজেন নামক হরমোন তৈরি করে, যা বেষ্ট ক্যান্সার ও বালিকাদের অগ্রিম বয়:সন্ধিক্ষণ ঘটাতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে।

৪. সালফার-ডাই অক্সাইড ও সালফাইট সমূহ ভিটামিন B1 ধ্বংস করে। অতিরিক্ত ব্যবহারে, অ্যাজমা, ত্বকের এলার্জি, মাইগ্রেনে সমস্যা, গলাফুলে যাওয়া, শিশুদের কতিপয় অনাকাঙ্খিত আচরণ যেমন- বেশি রেগে যাওয়া বা খিটখিটে হওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

৫. নাইট্রেট ও নাইট্রাইট এ সব জারণধর্মী লবণ মাংসের প্রোটিনের সাথে সহজেই বিক্রিয়া করে নাইট্রোসো অ্যামিন সৃষ্টি করে; যা ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে।

৫. BHA ও BHT এই প্রিজারভেটিভ গুলোর কারসিনোজেনিক (ক্যান্সার সৃষ্টিকারক) ও অ্যালার্জিক ধর্ম রয়েছে বলে এটি অল্প পরিমাণে ব্যবহৃত হয়।

৬. মাত্রাতিরিক্ত প্রোপাইল গ্যালেট ব্যবহার করলে শরীরে অ্যাজমা, পাকস্থলী এবং ত্বকের জ্বালাপোড়া জনিত সমস্যা ও অ্যালার্জি জনিত সমস্যা হতে পারে। এমনকি কিডনী ও লিভারের ক্ষতি হতে পারে।

Leave a Reply