গ্রিন হাউজ গ্যাসের ক্ষতিকর প্রভাবের বিস্তারিত

প্রশ্ন-গ্রিন হাউজ গ্যাস কী ?

উ: যে সব গ্যাস ভূপৃষ্ঠের বিকিরিত ওজ রশ্মিকে শোষন করে তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে তাদেরকে গ্রীন হাউজ গ্যাস বলে ।

প্রশ্ন: ভূ – পৃষ্ঠ উত্তপ্ত হওয়ার কারন ব্যাখ্যা কর।

উ: বায়ুমন্ডলের ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন হোমোস্ফিয়ারে N2,O2, O3 অণুর সাথে CO2 ও H2O অণুগুলো থাকে। এ অঞ্চলকে পৃথিবীর গ্রিন হাউজ বলে ।

ভূপৃষ্ঠ দৃশ্যমান আলো দ্বারা  উত্তপ্ত হয় । কিন্তু এই উত্তপ্ত ভূপৃষ্ঠ বৃহৎ তরঙ্গযুক্ত ইনফ্রারেড রশ্মি ((IR) বিকিরন করে । ইনফ্রারেড রশ্মি ((IR) কাচ ভেদ করতে পারে না । বায়ুমন্ডলের CO2 ও পানি বাষ্প (H2O) পোলার অনু হওয়ায় এদের C=O বন্ধন ও O-H ঐ বন্ধন দ্বি-পোল যুক্ত হয় । এছাড়া N2O এর NO এর N-O বন্ধন CFC এর C-Cl ও C-F বন্ধন পোলার হয় । এদের দ্বি-পোল মোমোন্ট সহজে পরিবর্তন ঘটে । তখন  এরা  বিকিরিত IR রশ্মি শোষন করে তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে । CO2 ও পানি বাষ্প (H2O) দ্বারা শোষিত তাপ পুনরাই বিকিরিত হয়ে ভূপৃষ্ঠ ফিরে আসে । এরুপে তাপমাত্রা আরো বেড়ে যায়। N2,H2, ও O2 এর গ্রিন হাউজ প্রভাব নেই ।

প্রশ্ন: CO একটি নীরব ঘাতক কেন ব্যাখ্যা কর।

উ: বিভিন্ন শিল্প হতে নিঃসৃত CO একটি নীরব ঘাতক। কারণ এটি স্বাদ, গন্ধ ও বর্ণহীন বিষাক্ত গ্যাস। মানুষ এর অস্তিত্ব টের পায় না। CO সক্রিয় লিগান্ড হিসেবে রক্তের হিমোগ্লোবিনে আয়রনের সাথে জটিল যৌগ গঠন করতে পারে। 

 হিমোগ্লোবিন শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ করে থাকে কিন্তু বায়ুতে CO থাকলে CO এর  অক্সিজেনের চেয়ে হিমোগ্লোবিনের প্রতি আসক্তি বেশি থাকায় হিমোগ্লোবিনের সাথে কার্বোক্সিহিমোগ্লোবিন নামক জটিল যৌগ গঠন করে মানুষের শরীরে অক্সিজেন প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে । এ জন্য CO কে নীরব ঘাতক বলা হয় ।

O2 + Hb → O2Hb (অক্সিহিমোগ্লোবিন)

O2Hb + CO →  COHb (কার্বক্সিহিমোগ্লোবিন) + O2 

তাছাড়া রক্তের আয়রনের সাথে CO বিক্রিয়া করে আয়রন পেন্টা কার্বনিল নামক জটিল যৌগ গঠন করতে পারে।

Fe + 5CO → Fe(CO)5

প্রশ্ন- বৈশ্বিক উষ্ণায়নে গ্রিন হাউজ গ্যাসের ভূমিকা ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: কার্বনডাই অক্সাইড CO2 মিথেন (CH4), নাইট্রাস অক্সাইড (N2O), ক্লোরোফ্লোরো কার্বন (CFC) ইত্যাদি গ্যাস গ্রিন হাউজ প্রভাব সৃষ্টি করে থাকে। দৃশ্যমান আলোর সব তরঙ্গ গ্রিন হাউজের কাচকে ভেদ করে ভেতরে ঢুকতে পারে। ভূপৃষ্ঠ দৃশ্যমান আলোক তরঙ্গ দ্বারা উত্তপ্ত হয়। কিন্ত উত্তপ্ত ভূপৃষ্ঠ বৃহৎ তরঙ্গ যুক্ত ইনফ্রারেড (IR) রশি বিকিরণ করে। ইনফ্রারেড (IR) রশি কাচ ভেদ করতে পারে না। একইভাবে বায়ুমণ্ডলের CO2 ও পানি বাষ্প (H2O) বিকিরিত IR রশিক শোষণ করে তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে। CO2 ও পানি বাষ্প (H2O) দ্বারা শোষিত তাপ পুনরায় বিকিরিত হয়ে ভূপৃষ্ঠে ফিরে আসে। এরূপে তাপমাত্রা বেড়ে যায়।

 প্রশ্ন- CO2 গ্রিন হাউজ গ্যাস বলা হয় কেন?

উত্তর: বিভিন্ন উৎস থেকে CO2 গ্যাস বায়ুমণ্ডলে নির্গত হওয়ায় দিনে। দিনে এর পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ওজনে ভারী হওয়ায় এটি ভূ-পৃষ্ঠের কাছাকাছি থাকে। অন্যান্য গ্যাসের তুলনায় CO2 গ্যাস বেশি তাপধারণ করে। ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। CO2 গ্যাসের তাপমাত্রা বৃদ্ধির ঘটনা গ্রীন হাউজ প্রভাব বলে পরিচিত। এজন্য CO2 কে গ্রীন হাউজ গ্যাস বলা হয়। ।

প্রশ্ন-CFC পরিবেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে-ব্যাখ্যাকর।

উত্তর: CFC থেকে ক্লোরিন ফ্রিরেডিকেল উৎপন্ন হয় যা ওজোনস্তরকে ধ্বংস করে। ওজোনস্তরে সৃষ্ট ছিদ্র দিয়ে সূর্য থেকে অতিবেগুনী রশ্মি নির্বিঘ্নে পৃথিবীর বায়ুমন্ডকে প্রবেশ করে। এতে ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। সুতরাং বলা যায় CFC পরিবেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

Leave a Reply