সিরামিকস উৎপাদনের মূলনীতি:-
সিরামিকস প্রস্তুতির কাঁচামাল [ক্লে বা কেওলিন(Al2O3 . 2SiO2.2H2O), সিলিকা (SiO2) এবং ফেলস্পার (K2O.Al2O3.6SiO2) ] এর আনুপাতিক মিশ্রণকে চুল্লিতে 600-650 তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করলে সিরামিকস এর গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ক্লে থেকে কেলাস পানি আপসারিত হয়ে অ্যালুমিনা (Al2O3) এবং সিলিকার (SiO2) অদানাদার মিশ্রণ তৈরি হয়।
এর পর 940 তাপমাত্রায় অদানাদার অ্যালুমিনা প্রচুর তাপ উদগিরণ করে দানাদার অ্যালুমিনা গঠন করে।
প্রায় 1000 তাপমাত্রায় দানাদার অ্যালুমিনা (Al2O3) এবং সিলিকা (SiO2) মিশ্রণটি ফেলস্পার (K2O.Al2O3.6SiO2) এর উপন্থিতিতে বিগলিত হয়ে মুলাইট (Mullite , 3Al2O3 . 2SiO2) গঠন করে।
তাপমাত্রায় আরো 1400-1500 বৃদ্ধি পেলে অবশিষ্ট সিলিকা (SiO2) কেলাসিত হয়ে ক্রিস্টোবেলইট (4SiO2) নামক দানাদার মিশ্রনে পরিণত হয়। এভাবে উৎপন্ন মুলাইট এবং ক্রিস্টোবেলাইট এর মিশ্রণ (বিস্কুট) তথা সিরামিকস উপন্ন হয়।
(i), (ii) ও (iii) বিক্রিয়া যোগ করলে মোট বিক্রিয়া নিম্নরুপ:-
সিরামিকস উৎপাদনের প্রণালী:-
আকৃতি প্রদান: সিরামিকস প্রস্ততির কাঁচামালকে চূর্ণ করে নির্দিষ্ট অনুপাতে মিশ্রিত করে পানি দ্বারা ভিজিয়ে তরল সমসত্ব মিশ্রন তৈরি করা হয়, একে স্লিপ বলে। প্রাপ্ত মিশ্রণকে (স্লিপ) ফিল্টার প্রেস মেসিনে নিয়ে বায়ু ও অতিরিক্ত পানি দূর করে নমনীয় পর্দাথে পরিণত করা হয় একে ফিল্টার কেক বলে। তবে এতে প্রায় 20% পানি মিশ্রিত থাকে। প্রস্তুতকৃত ফিল্টার কেক কে ছাঁচে ফেলে বিভিন্ন দ্রব্য সামগ্রীর আকৃতি দেওয়া হয়।
শুকানো: চুল্লিতে ধীরে ধীরে তাপ প্রয়োগ করে কেলাস পানি ছাড়া অতিরিক্তা পানি মুক্ত পণ্য তৈরি করা হয়। এই অতিরিক্তা পানি মুক্ত পণ্য সামগ্রীকে ব্লাংক (blank) বলে।
পোড়নো: শুষ্ক সিরামিক সামগ্রীকে saggers নামক ট্রে-তে সাজিয়ে kiln-এ প্রায় 1500 উষ্ণতায় তাপ দেওয়া হয়। এ প্রক্রিয়াকে বিস্কুট ফায়ারিং বলে। এর ফলে মুলাইট ও ক্রিস্টাবেলাইট তথা সিরাসিকস গঠিত হয়।
গ্লেজিং: সাধারণত raw সিরামিকস সামগ্রীর উপর অসংখ্য ছিদ্র থাকে এবং পৃষ্ঠতল বেশ অমসৃন থাকে। তাই (CaO, Al2O3, Na2O, PbO, B2O3) প্রভৃতির বিগলিত মিশ্রণে যাকে glaze মিশ্রণ বলে, এর মধ্যে ডুবিয়ে অথবা তপ্ত সিরামিক দ্রব্যের উপর NaCl ছিটিয়ে দিলে স্টিমের উপস্থিতে NaCl
1600 তাপমাত্রায় বিয়োজিত হয়ে Na2O এবং HCl গ্যাস উৎপন্ন করে। অতঃপর উৎপন্ন Na2O সিরামিসকের সিলিকার (SiO2) সাথে গলিত Na2SiO3 তৈরি করে ছিদ্রগুলো বন্ধ করে মসৃণতা সৃষ্টি করে। এ প্রক্রিয়ারই নাম গ্লেজিং। তবে কখনও কখনও গ্লেজ এর সঙ্গে রঙ্গিন ধাতব অক্সাইড (যেমন: CoO নীল, Fe2O3 হলুদ, CuO সবুজ ) ব্যবহার করে পৃষ্টতল রঙ্গিনও করা হয়।
প্রবাহ চিত্র: