প্রশ্ন–≥ঘূর্ণিঝড়ের প্রধান কারণ কী?
উত্তর: ক্রান্তীয় অঞ্চলের বা নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের স্বল্প পরিসর স্থানের বায়ু হঠাৎ খুব বেশি উত্তপ্ত হলে এক গভীরে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। তখন পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের অপেক্ষাকৃত শীতল ও ভারী বায়ু পাক খেতে খেতে কুণ্ডলীর আকারে এই নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে ছুটে আসে। নিম্নচাপ অঞলে পৌছে বায়ু গরম ও উর্ধ্বমুখী হয়। এই ধরনের কেন্দ্রমুখী ও উর্ধ্বমুখী কুণ্ডলী আকারে আবর্তিত বায়ুর কারণে ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হয়।
প্রশ্ন–≥পরমশূন্য(273°C) তাপমাত্রায় গ্যাসের আয়তন শূন্য হয় কেন?
উত্তর: যে তাপমাত্রায় কোনো গ্যাসের আয়তন তাত্ত্বিকভাবে শূন্য হয়, তাকে পরমশূন্য তাপমাত্রা বলে । চার্লসের সূত্রানুযায়ী, স্থিরচাপে নির্দিষ্ট ভরের কোনো গ্যাসের আয়তন প্রতি ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বৃদ্ধি বা হ্রাসের জন্য তার 0°C তাপমাত্রায় নির্ণীত আয়তনের 1/273 অংশ বৃদ্ধি বা হ্রাস ঘটে । চার্লসের সূত্রানুযায়ী,
অতএব, যে কোন গ্যাসের জন্য তা -273°C তাপমাত্রায় আয়তন শূন্য হয়।
প্রশ্ন–≥তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে গ্যাসের চাপ বৃদ্ধি পায় কেন?
উত্তর: গ্যাস পাত্রের আয়তন স্থির রেখে কোন গ্যাসকে তাপমাত্রায় তাপ দিলে, সে গ্যাসের অণুসমূহের মধ্যে আন্তঃআনবিক দূরত্ব বেড়ে যায়। অণুগুলো তাপ হতে শক্তি গ্রহণ করে বলে, তাদের গতিশক্তি ও কম্পনশক্তি বৃদ্ধি পায়। ফলে, অণুসমূহের ছোটাছুটি বেড়ে যায় এবং পাত্রের উপর চাপের সৃষ্টি হয়।এভাবে, তাপমাত্রা বৃদ্ধি করলে গ্যাসের চাপ বেড়ে যায়।
প্রশ্ন-≥গ্যাসের চাপ সৃষ্টি হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: গ্যাসের চাপ সৃষ্টি হওয়ার কারণ: কোনো গ্যাসকে যদি কোনো একটি পাত্রে রাখা হয় তবে পাত্রে গ্যাসের চাপের সৃষ্টি হয়। এর কারণ কোন গ্যাস অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অণুর সমন্বয়ে গঠিত। এ অণুগুলো পাত্রের অভ্যন্তরে অতি দ্রুতবেগে বিক্ষিপ্তভাবে ছুটাছুটি করতে থাকে। এর ফলে অণুগুলোর পরস্পরের মধ্যে এবং পাত্রের দেয়ালের সাথে অবিরাম সংঘর্ষ হয়।পাত্রের দেয়ালের উপর গ্যাসের অণুসমূহের অবিরাম সংঘর্ষের ফলেই গ্যাসে চাপের সৃষ্টি হয়।
প্রশ্ন-≥বাস্তব গ্যাসের চাপ আদর্শ গ্যাসের চাপ অপেক্ষা কম কেন?
উত্তর: গ্যাসের গতিতত্ত্বের স্বীকার্যমতে, আদর্শ গ্যাসের অণুসমূহের মধ্যে আকর্ষণ-বিকর্ষণ নেই। কিন্তু বাস্তব গ্যাসের অণুসমূহের মধ্যে আকর্ষণ-বিকর্ষণ আছে বলে গ্যাসকে তরলীভূত করা যায়। এ আকর্ষণ বলের প্রভাবে বাস্তব গ্যাসের অণুসমূহ গ্যাস পাত্রের দেয়ালে যে পরিমাণ চাপ প্রয়োগ করতে পারতো তা অপেক্ষা কিছুটা হলেও কম চাপ প্রয়োগ করে। তাই বাস্তব গ্যাসের চাপ, একই অবস্থায় আদর্শ গ্যাসের চাপ অপেক্ষা কম।
প্রশ্ন-≥বাস্তব গ্যাস কখন আদর্শ গ্যাসের মত আচরণ করে?
উত্তর: সকল বাস্তব গ্যাস কক্ষ তাপমাত্রা ও চাপে আদর্শ গ্যাসের সমীক মেনে চলে না। কিন্তু উচ্চ তাপমাত্রা ও নিম্নচাপে গ্যাসের আয়তন ও চাপজনিত এুটি নগন্য হয়। তাই উচ্চ তাপমাত্রা ও নিম্নচাপে বাস্তব গড়ে আদর্শ গ্যাসের সমীকরণ মেনে চলে।
প্রশ্ন-≥N2 গ্যাস PV = nRT সূত্র মেনে চলে না কেন?
উত্তর: PV = nRT সেই সকল গ্যাসের জন্য প্রযোজ্য যে সকল গ্যাস আদর্শ গ্যাসের ন্যায় আচরন করে অথাৎ যে সকল গ্যাসের কণাসমূহের মধ্যে আন্তঃআনবিক শক্তি কম এবং আন্তঃকণা দূরত্ব সবচেয়ে বেশি। কিন্তু N2 বাস্তব গ্যাস হওয়ায় গ্যাসের কণাসমূহের মধ্যে আন্তঃআনবিক শক্তি বেশি এবং আন্তঃকণা দূরত্ব সবচেয়ে কম। এজন্য N2, PV = nRT সমীকরণ পুরোপুরি মেনে চলে না।
প্রশ্ন–≥R এর তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর :
উত্তর: নিজেদের মধ্যে বিক্রিয়া করে না এমন দুটি গ্যাস (A ও B) কে T তাপমাত্রায় V আয়তনের কোনো পাত্রে মিশ্রিত করলে উক্ত পাত্রের সম্পূর্ণ জায়গা দখল করে A ও B আলাদা ভাবে যে চাপ সৃষ্টি করবে তা উক্ত মিশ্রণে যথাক্রমে A ও B গ্যাসের আংশিক চাপ। আর্দশ গ্যাস মীকরণ অনুযায়ী,
প্রশ্ন-≥নাইট্রোজেন ফিক্সেশন বলতে কী বোঝ?
উত্তর: বায়ুস্থ N2 গ্যাসকে নাইট্রোজেন যৌগে পরিণত এবং তা উদ্ভিদের ব্যবহার উপযোগী করে মাটিতে সংবদ্ধকরণকে নাইট্রোজেন ফিক্সেশন বলে। হেবার পদ্ধতিতে N2 ও H2 গ্যাস হতে প্রভাবকীয় সংশ্লেষণ বিক্রিয়ায় NH3 উৎপন্ন করে তা থেকে ইউরিয়া ও ডাই অ্যামেনিয়াম ফসফেট সার প্রস্তুত করা হয়। এছাড়া শৈবাল ও মটর, শিম, ছোলা প্রভৃতি লিগুমিনাস জাতীয় উদ্ভিদের শিকড়ের গুটিতে বাসকারী সিমবায়োটিক জীবাণু বায়ুর N2 শোষণ করে।
প্রশ্ন-≥H3PO4 অপেক্ষা HNO3 সবল কেন?
উত্তর: অক্সো এসিড সমূহের অর্থাৎ অক্সিজেনযুক্ত এসিডসমূহের কেন্দ্রীয় পরমাণুর ধনাত্মক জারণ সংখ্যা যত বেশি ঐ এসিডের তীব্রতা তত বেশি। আবার, অক্সোএসিডসমূহের কেন্দ্রীয় পরমাণুর ধনাত্মক জারণ সংখ্যা সমান হলে তখন যেটির কেন্দ্রীয় পরমাণুর আকার ছোট হবে অর্থাৎ চার্জ ঘনত্বের ক্রম বৃদ্ধি অনুসারে সে এসিডের তীব্রতা বেশি হয়। যেমন, H3PO4 ও HNO3 উভয় এসিডের কেন্দ্রিয় পরমাণুর জারণ সংখ্যা সমান (+5)। তবে ২য় পর্যায়ভুক্ত N পরমানুর আকার ৩য় পর্যায়ভুক্ত P-পরমাণুর আকারের চেয়ে ছোট বলে P পরমাণুর তুলনায় N পরমাণুর চার্জ ঘনত্ব বেশি। তাই H3PO4 অপেক্ষা HNO3 সবল।
প্রশ্ন-≥HNO3 অপেক্ষা H3PO4 দূর্বল এসিড কেন?
উত্তর: যে অক্সি এসিডের কেন্দ্রীয় পরমাণুর জারণ সংখ্যা যত বেশি সেটি তত বেশি শক্তিশালী এসিড । HNO3 কেন্দ্রিয় পরমাণুর জারণ সংখ্যা +5 এবং H3PO4 কেন্দ্রিয় পরমাণুর জারণ সংখ্যা +5। এক্ষেত্রে, অর্থাৎ অক্সোএসিডদ্বয়ের কেন্দ্রিয় পরমাণুর ধনাত্মক জারণ সংখ্যা সমান । তাই যেটির কেন্দ্রীয় পরমাণুর আকার ছোট অর্থাৎ চার্জ ঘনত্ব বেশি সে এসিডের তীব্রতা বেশি হবে। ৩য় পর্যায়ভুক্ত P পরমাণুর আকার ২য় পর্যায়ভুক্ত N এর আকারের তুলনায় বড় হওয়ায় P পরমাণুর তুলনায় N পরমাণুর চার্জ ঘনত্ব বেশি। তাই HNO3 অপেক্ষা H3PO4 দুর্বল এসিড।
প্রশ্ন-≥NH3 এবং HCI এর মধ্যে কোনটির ব্যাপন হার বেশি? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: NH3 এর ব্যাপন হার HCI এর ব্যাপন হার অপেক্ষা বেশি। আমরা জানি, যে গ্যাসের ঘনত্ব যত বেশি, তা তত ধীরে ব্যাপিত হয়। অর্থাৎ ব্যাপনের হার তত কম। NH3 এর আণবিক ভর 17 যা HCl এর আণবিক ভর 36.5 অপেক্ষা কম। এ থেকে বোঝা যায় NH3 এর ঘনত্ব HCI এর ঘনত্ব অপেক্ষা কম। যে গ্যাসের ঘনত্ব যত কম সে গ্যাসের ব্যাপন হার তত বেশি হয়। তাই বলা যায় যে, NH3 এর ব্যাপন হার HCl এর ব্যাপন হার অপেক্ষা বেশি।
প্রশ্ন-≥RMS বেগ বলতে কী বোঝ?
উত্তর: কোনো গ্যাসের অণু সমূহের বিভিন্ন গতিবেগের বর্গের গড়মান গ্রহণ করে তার বর্গমূল করলে যে বেগ পাওয়া যায় তাকে গ্যাসটির অণুসমূহের বর্গমূল গড় বর্গবেগ বা RMS বেগ বলে।
প্রশ্ন-≥বাস্তব গ্যাস কী কখনো আদর্শ আচরণ করতে পারে-ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: বাস্তবে কোনো গ্যাসই আদর্শ আচরণ প্রদর্শন করতে পারে না। কারণ আদর্শ গ্যাস একটি কাল্পনিক ধারণা মাত্র। আমাদের পরিচিত সব গ্যাসই যেমন- H2,N2, এবং CO2 প্রভৃতি বাস্তব গ্যাস। এ গ্যাসগুলো পুরোপুরিভাবে গ্যাস সূত্রসমূহ মেনে চলে না। এ কারণেই এ গ্যাসসমূহ আদর্শ গ্যাস সমীকরণ PV = nRT এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তবে উচ্চ তাপমাত্রায় এবং নিম্ন চাপে বাস্তব গ্যাসসমূহ মোটামুটিভাবে আদর্শ গ্যাসের ন্যায় আচরণ করে।
প্রশ্ন-≥CO2 এর সন্ধিচাপ 72.9 atm ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: CO2 এর সন্ধিচাপ 72.9 atm বলতে বুঝায় CO2 গ্যাসকে তরলীভূত করতে গেলে কমপক্ষে 72.9 atm চাপ লাগবে। চাপ 72.9 atm এর নিচে রেখে তাপমাত্রা যতই কমানো হোক না কেন গ্যাসটি কোনো ভাবেই তরলীভূত হবে না।
প্রশ্ন-≥CO2 এর সন্ধি তাপমাত্রা 31.1°C বলতে কী বোঝ?
উত্তর: CO2 এর সন্ধি তাপমাত্রা 31.1°C বলতে বুঝা যায় যে, 31.1°C তাপমাত্রার উপরে যথেষ্ট চাপ প্রয়োগ করেও CO2 কে তরলীভূত করা সম্ভব নয় কিন্তু 31.1°C বা তার নিচের তাপমাত্রায় প্রয়োজনীয় চাপ প্রয়োগে CO2 গ্যাসকে তরলে রূপান্তরিত করা যায়।
প্রশ্ন-≥জুল থমসন প্রভাব ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: উচ্চচাপ বিশিষ্ট গ্যাসকে নিম্নচাপ বিশিষ্ট (বা প্রায় শূন্য চাপ বিশিষ্ট) এলাকায় সম্প্রসারিত হতে দিলে একে কোন বাহ্যিক কাজ করতে হয় না। এ সমপ্রসারণ হঠাৎ সংঘটিত হওয়ায় কোনো তাপ এলাকা হতে বের হতে পারে না বা ভিতরে প্রবেশ করতে পারে না। তা সত্ত্বেও তাপমাত্রা কমার কারণ হচ্ছে অণুসমূহ পূর্বে পরস্পরের যথেষ্ট নিকটে ছিল । সমপ্রসারণের ফলে এগুলো পরস্পর হতে দূরে সরে যায় এবং তখন তাদের মধ্যকার আকর্ষণ বলের বিরুদ্ধে কাজ করতে হয় । এ কাজ করতে যে শক্তির প্রয়োজন হয়, তা গ্যাসটির অভ্যন্তরীণ শক্তি হতে শোষিত হয়। ফলে গ্যাসের তাপমাত্রা হ্রাস পায়।
প্রশ্ন-≥সাধারণ তাপমাত্রায় H2 গ্যাসে জুল-থমসন সম্প্রসারণে কি পরিবর্তন হয়? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: জুল-থমসন প্রভাব অনুযায়ী একটি গ্যাসকে অত্যাধিক সংকুচিত করার পর হঠাৎ সম্প্রসারণ করা হলে গ্যাসের তাপমাত্রা হ্রাস পায়। অত্যাধিক সংকুচিত অবস্থায় কম চাপে সম্প্রসারণ করা হলে কক্ষতাপমাত্রায় হাইড্রোজেন গ্যাসের তাপমাত্রা হ্রাস না পেয়ে বৃদ্ধি পায়। তাই কক্ষতাপমাত্রায় হাইড্রোজেন গ্যাসের উপর জুল-থমসন প্রভাব কার্যকর নয়। কিন্তু উক্রম, তাপমাত্রায় হাইড্রোজেন গ্যাসের উপর জুল-থমসন প্রভাব কার্যকর।
প্রশ্ন-≥CO একটি দাহ্য গ্যাস কেন?
উত্তর: কার্বন মনোক্সাইডে (CO) কার্বনের জারণ মান +2। কার্বনের সর্বোচ্চ জারণ মানের (+4) থেকে কম বলে এর জারণ মান বৃদ্ধির প্রবণতা থাকে। ফলে CO এর কার্বন আরও অক্সিজেনের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার প্রবণতা প্রদর্শন করে। অর্থাৎ CO এর কার্বন অক্সিজেন দ্বারা জারিত হতে পারে। তাই CO একটি দাহ্য গ্যাস।
প্রশ্ন-≥বৈশ্বিক উষ্ণায়নে গ্রিন হাউজ গ্যাসের ভূমিকা ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: কার্বনডাই অক্সাইড CO2 মিথেন (CH4), নাইট্রাস অক্সাইড (N2O), ক্লোরোফ্লোরো কার্বন (CFC) ইত্যাদি গ্যাস গ্রিন হাউজ প্রভাব সৃষ্টি করে থাকে। দৃশ্যমান আলোর সব তরঙ্গ গ্রিন হাউজের কাচকে ভেদ করে ভেতরে ঢুকতে পারে। ভূপৃষ্ঠ দৃশ্যমান আলোক তরঙ্গ দ্বারা উত্তপ্ত হয়। কিন্ত উত্তপ্ত ভূপৃষ্ঠ বৃহৎ তরঙ্গ যুক্ত ইনফ্রারেড (IR) রশি বিকিরণ করে। ইনফ্রারেড (IR) রশি কাচ ভেদ করতে পারে না। একইভাবে বায়ুমণ্ডলের CO2 ও পানি বাষ্প (H2O) বিকিরিত IR রশিক শোষণ করে তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে। CO2 ও পানি বাষ্প (H2O) দ্বারা শোষিত তাপ পুনরায় বিকিরিত হয়ে ভূপৃষ্ঠে ফিরে আসে। এরূপে তাপমাত্রা বেড়ে যায়।
প্রশ্ন-≥CO2 গ্রিন হাউজ গ্যাস বলা হয় কেন?
উত্তর: বিভিন্ন উৎস থেকে CO2 গ্যাস বায়ুমণ্ডলে নির্গত হওয়ায় দিনে। দিনে এর পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ওজনে ভারী হওয়ায় এটি ভূ-পৃষ্ঠের কাছাকাছি থাকে। অন্যান্য গ্যাসের তুলনায় CO2 গ্যাস বেশি তাপধারণ করে। ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। CO2 গ্যাসের তাপমাত্রা বৃদ্ধির ঘটনা গ্রীন হাউজ প্রভাব বলে পরিচিত। এজন্য CO2 কে গ্রীন হাউজ গ্যাস বলা হয়। ।
প্রশ্ন-≥C.F.C কীভাবে ওজন স্তরকে ধ্বংস করে ?
উত্তর: ক্লোরোফ্লোরোকার্বন (CFC) অণু UV রশ্মি দ্বারা আক্রান্ত হলে C-Cl বন্ধন ভেঙে মুক্ত ইলেকট্রনযুক্ত ক্লোরিন পরমাণু উৎপন্ন হয়। বেজোড় ইলেকট্রন Cl পরমাণু অধিক সক্রিয় হওয়ায় ওজোন অণু (O3) এর সাথে বিক্রিয়ায় প্রথমে CIO• এবং O2 উৎপন্ন করে। পরে CIO• মুক্তমূলক অক্সিজেন পরমাণুর সাথে বিক্রিয়া করে O2 অণু ও ক্লোরিন পরমাণু তৈরি হয়। এভাবে ওজনস্তর ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।
CF2Cl2 CF2Cl• + CI•
O3 + Cl• → ClO• + O2
CIO• + O → Cl• + O
এভাবে Cl•এর মাধ্যমে ওজনস্তরের ক্ষতি হয়।
প্রশ্ন-≥CFC পরিবেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে-ব্যাখ্যাকর।
উত্তর: CFC থেকে ক্লোরিন ফ্রিরেডিকেল উৎপন্ন হয় যা ওজোনস্তরকে ধ্বংস করে। ওজোনস্তরে সৃষ্ট ছিদ্র দিয়ে সূর্য থেকে অতিবেগুনী রশ্মি নির্বিঘ্নে পৃথিবীর বায়ুমন্ডকে প্রবেশ করে। এতে ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। সুতরাং বলা যায় CFC পরিবেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
প্রশ্ন-≥ওজোন স্তর UV রশ্মি থেকে আমাদেরকে কি ভবে রক্ষ করে? ব্যাখ্যাকর।
উত্তরঃ সূর্য রশ্মির সাথে UV রশি নির্গত হয় যা অত্যন্ত ক্ষতিকর। O3 স্তর এই UV রশ্মি শোষণ করে রাখে। UV রশ্মি পৃথিবীতে প্রবেশ করে ত্বকে ক্যান্সার সৃষ্টি করে। UV রশি মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস করে। O3 স্তর UV রশ্মি শোষণ করে এবং আমাদেরকে এর ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে রক্ষা করে।
প্রশ্ন-≥পরিবেশের উপর CO2 ও SO2 দূষণের প্রভাব লিখ।
উত্তর: CO2 গ্যাস বায়ুমন্ডলে বিকিরিত তাপের বেশ খানিকটা অংশ মহাশূন্যে হারিয়ে যেতে না দিয়ে ধরে রাখে। এতে বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। CO2 ও SO2 বাতাসের অক্সিজেন ও পানির সাথে বিক্রিয়ার মাধ্যমে কার্বনিক এসিড, সালফিউরাস এসিড ও সালফিউরিক এসিড উৎপাদন করে এবং এসিড বৃষ্টি ঘটায়। এতে জলাশয়ের মাছ মরে যায় এবং মাটিতে কোনো ফসল ফলে না। এছাড়া এসিড বৃষ্টির বলে দালান কোঠা ব্যাপকভাবে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।
প্রশ্ন-≥HSO4– অণুবন্ধী ক্ষারক কি? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: কোনো অম্ল থেকে একটি প্রোটন অপসারণের ফলে যে ক্ষারক সৃটি হয়, তাকে সে অম্লের অনুবন্ধী ক্ষারক বলা হয়। HSO4– হলো H2SO4 এর অনুবন্ধী ক্ষারক। H2SO4 একটি প্রোটন দানের পর H2SO4 আয়নে পরিণত হয়। এই HSO4– আয়ন আবার প্রোটন গ্রহণে সক্ষম। তাই অনুবন্ধী ক্ষারক।
প্রশ্ন-≥HCO3– উভধর্মী পদার্থ কেন?
উত্তর: ব্রনস্টেড-লাউরীর মতবাদ অনুসারে যেসব পদার্থ অন্য পদার্থকে প্রোটন দান করতে পারে তাদেরকে এসিড বলে। HCO3– একাটি এসিড। কারণ এটি NH3 কে একটি প্রোটন দান করে।
HCO3– + NH3 ⇔ NH4+ + CO3–
আবার, যেসব পদার্থ অন্য পদার্থ থেকে প্রোটন গ্রহণ করে তাদের ক্ষারক বলে। HCO3– একটি ক্ষারক। এটি HCl অণু থেকে একটি প্রোটন গ্রহণ করতে পারে।
HCO3– + 2HCl ⇔ H2CO3 + 2CI–
তাই HCO3– আয়ন উভধর্মী।
প্রশ্ন-≥প্রশ্ন-≥ HSO4– উভধর্মী পদার্থ কেন?
উত্তর: ব্রনস্টেড-লাউরীর মতবাদ অনুসারে যেসব পদার্থ অন্য পদার্থকে প্রোটন দান করতে পারে তাদেরকে এসিড বলে । HSO4– একটি এসিড। কারণ এটি NH3 কে একটি প্রোটন দান করে।
HSO4– + NH3 ⇔ NH4+ + SO42-
আবার, যেসব পদার্থ অন্য পদার্থ থেকে প্রোটন গ্রহণ করে তাদেরকে ক্ষারক বলে। HSO4– একটি ক্ষারক। এটি HCl অণু থেকে একটি প্রোটন গ্রহণ করতে পারে।
HSO4– + HCl ⇔ H2SO4 + CI–
তাই HSO4– আয়ন উভধর্মী।
প্রশ্ন-≥H2O একটি উভধর্মী পদার্থ ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: প্রোটনীয় মতবাদ অনুসারে যেসব অণু বা আয়ন অবস্থাভেদে প্রোটন দাতা ও গ্রহীতা উভয় প্রকার আচরণ করে অর্থাৎ অম্ল ও ক্ষারক উভয়রুপে ক্রিয়া করে তাদেরকে উভধর্মী পদার্থ বলে । পানি একটি উভধর্মী পদার্থ। কারণ পানি ক্ষারের সাথে বিক্রিয়া করার সময় ক্ষারকে প্রোটন দান করে, আবার এসিডের সাথে বিক্রিয়া করার সময় প্রোটন গ্রহণ করে।
NH3 + H2O ⇔ NH4+ + OH–
HCl + H2O ⇔ H3O+ + CI–
সুতরাং এসিড ও ক্ষার উভয়ের সাথে ক্রিয়া করায় পানি একটি উভধর্মী পদার্থ।
প্রশ্ন–≥দুর্বল অম্লের অনুবন্ধী ক্ষারক শক্তিশালী হয় কেন?
উত্তর: দুর্বল অম্নের অনুবন্ধী ক্ষারক শক্তিশালী হয়। যেমন: এক উভমুখী বিক্রিয়া হলো-
HB ⇔ H+ + B–
অম্ল পোটন ক্ষারক
যদি HB দুর্বল অম্ন হয়, তবে উপরিউক্ত বিক্রিয়াটি সাম্যাবস্থায় দিকে অবস্থান করবে। সুতরাং বিপরীত বিক্রিয়াটি অর্থাৎ ক্ষারক এর সাথে প্রোটিন সংযোগের মাত্রা বেশি হবে। আমাদের জানা অম্লের ক্ষারক যত বেশি মাত্রায় H+ আয়ন গ্রহণ করতে পারে সেটি তীব্র ক্ষারক। তাই শক্তিশালী ক্ষারক হবে। সুতরাং দুর্বল অম্লের অনুবন্ধী ক্ষারক শক্তিশালী হয়।
প্রশ্ন-≥দুর্বল ক্ষারকের অনুবন্ধী অম্ল সবল হয় কেন?
উত্তর: দুর্বল ক্ষারকের অণুবন্ধী অম্ল শক্তিশালী। কারণ দুর্বল ক্ষারক প্রোটন গ্রহণ করার পর যে আয়নে পরিণত হয় তা আবার দ্রুত প্রোটন ত্যাগ করে নিরপেক্ষ যৌগে পরিণত হবে অর্থাৎ প্রোটন দানের মাত্রা বেড়ে যাবে।
H2O + H+ ⇔ H3O+
দুর্বল ক্ষারক শক্তিশালী অণুবন্ধী অম্ল
H2O দুর্বল ক্ষারক, তাই বিক্রিয়াটির সাম্যবস্থা বাম দিকে অবস্থান করবে। সুতরাং বিপরীত বিক্রিয়াটি অর্থাৎ অণুবন্ধী অম্ল H3O+ এর প্রোটন ত্যাগের মাত্রা বেড়ে যাবে অর্থাৎ অণুবন্ধী অম্ল শক্তিশালী হবে।
তাই দুর্বল ক্ষারকের অণুবন্ধী অনু সবল হয়।
প্রশ্ন–≥তীব্র এসিডের অনুবন্ধী ক্ষারক দূর্বল- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: কোন অম্ল থেকে একটি H+ অপসারণের ফলে যে ক্ষারক সৃষ্টি হয়। তাকে ঐ অম্লের অনুবন্ধী ক্ষারক বলে। যেমন:
HB → H+ + B–
তীব্র এসিডের দূর্বল ক্ষার
যদি HB তীব্র অম্ল হয় তাহলে উপরোক্ত বিক্রিয়া সাম্যাবস্থা হতে ডান দিকে সরে যেতে থাকবে। ফলে B– এর প্রোটন গ্রহণের হার কম হবে। অর্থাৎ B দুর্বল ক্ষার হবে। এজন তীব্র এসিডের অনুবন্ধী ক্ষার দুর্বল।
প্রশ্ন-≥অনুবন্ধী অম্ল ও ক্ষারকের মধ্যে একটি প্রােটনের পার্থক্য থাকে- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: কোন ক্ষারকের সাথে একটি প্রোটন সংযোগের ফলে যে অম্লের সৃষ্টি হয় তাকে সে ক্ষারকের অনুবন্ধী অম্ল বলে।
যেমন: NH3 + H+ ⇔ NH4+
আবার, কোনো অন্ত্র থেকে একটি প্রোটন অপসারণের ফলে যে ক্ষারক সৃষ্টি হয় তাকে সে অম্লের অনুবন্ধী ক্ষারক বলে।
যেমন: H2SO4 ⇔ HSO4– + H+
দেখা যাচ্ছে যে, একটি প্রোটন যুক্ত হলে অনুবন্ধী অম্ল এবং একটি প্রোটন মুক্ত হলে অনুবন্ধী ক্ষারকের সৃষ্টি হচ্ছে। তাই বলতে পারি, অনুবন্ধী অস্ত্র ও ক্ষারকের মধ্যে একটি প্রোটনের পার্থক্য থাকে।
প্রশ্ন-≥NH3 + H2O ⇔ NH4+ + OH– এ বিক্রিয়ার ক্ষেত্রে অনুবন্ধী এসিড-ক্ষার চিহ্নিত করে ব্যাখ্যা দাও।
উত্তর: কোনো ক্ষারকের সাথে একটি প্রোটন সংযোগের ফলে যে অম্লের সৃষ্টি হয় তাকে অনুবন্ধী অম্ল এবং কোনো অম্ল থেকে একটি প্রোটন অপসারণের ফলে যে ক্ষারকের সৃষ্টি হয় তাকে অনুবন্ধী ক্ষারক বলে।
NH3 + H2O ⇔ NH4+ + OH–
প্রোটন দান উপরোক্ত বিক্রিয়ায় NH4+ হচ্ছে NH3 এর অনুবন্ধী অম্ল OH– হলো H2O এর একটি অনুবন্ধী ক্ষারক।
প্রশ্ন-≥গ্যাসের গতিতত্ত্বের দুটি স্বীকার্য লেখ।
উত্তর: গ্যসের গতিতত্ত্বের দুটি স্বীকার্য নিম্নরূপ:
(i) যেকোনো গ্যাস অসংখ্য ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণিকাসমূহের সমন্বয়ে গঠিত। যে কোনো নির্দিষ্ট গ্যাসসমূহের ভর পরস্পর সমান।
(ii) অণুসমূহের মোট আয়তন গ্যাসাধারের আয়তনের তুলনায় অতি নগণ্য।
প্রশ্ন-» অনুবন্ধী অম্ন ও অনুবন্ধী কারক ব্যাখ্যা করো।
উত্তর:কোনো ক্ষারকের সাথে একটি প্রোটন সংযোগের ফলে যে রাসায়নিক সত্তায় পারিণত হয় তাকে সে ক্ষারকের অনুবন্ধী অম্ল বলা হয়।
যেমন : NH3 + H+ ⇔ NH4+
ক্ষারক প্রোটন অনুবন্ধী অম্ল
কোন অম্ল থেকে একটি প্রোটন অপসারণের ফলে যে রাসায়নিক সত্তায় পারিণত হয় তাকে সে অম্লের অনুবন্ধী ক্ষারক বলে।
যেমন : HCl ⇔ H+ + CI–
এসিড প্রোটন অনুবন্ধী ক্ষারক
প্রশ্ন-≥AlCl3 একটি লুইস এসিড কেন?
উত্তর: লুইস তত্ত্বানুসারে অল্প হলো এমন একটি যৌগ বা আয়ন যা একটি নিঃসঙ্গ ইলেকট্রন জোড় গ্রহণ করে। AlCl3 একটি লুইস এসিড। কারণ এ যৌগটি মুক্তজোড় ইলেকট্রন গ্রহণে সক্ষম। যৌগটির গঠন হতে দেখা যায়, কেন্দ্রীয় পরমাণুর অষ্টক পূর্ণ হয়নি। অর্থাৎ এর গঠনে এক জোড়া ইলেকট্রনের ঘাটতি রয়েছে। এ কারণে AlCl3 যৌগ NH3 থেকে একজোড়া ইলেকট্রন গ্রহণ করে সন্নিবেশ সমযোজী বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে অষ্টক পূর্ণ করে বলেই এটি অধর্মী।
প্রশ্ন-≥BF3 অম্লধর্মী কেন?
উত্তর: লুইস তত্ত্বানুসারে অম্ল হলো এমন একটি যৌগ বা আয়ন যা একটি নিঃসঙ্গ ইলেকট্রন জোড় গ্রহণ করে। সাধারণত যেসব যৌগের কেন্দ্রীয় পরমাণুর অষ্টক অপূর্ণ থাকে সেগুলো লুইস এসিড হিসেবে ক্রিয়া করে। BF3 একটি লুইস অল্প যা NH3 থেকে একজোড়া ইলেকট্রন গ্রহণ করে সন্নিবেশ সমযোজী বন্ধনে আবদ্ধ হয়। তাই BF3 একটি লুইস অম্ল।
প্রশ্ন-≥FeCl3 লুইস এসিড কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: লুইস তত্ত্বানুসারে অল্প হলো এমন একটি যৌগ বা আয়ন যা একটি নিঃসঙ্গ ইলেকট্রন জোড় গ্রহণ করে। FeCl3 একটি লুইস এসিড। কারণ এ যৌগটি মুক্তজোড় ইলেকট্রন গ্রহণে সক্ষম। যৌগটির গঠন হতে দেখা যায়, কেন্দ্রীয় পরমাণুর অষ্টক পূর্ণ হয়নি। অর্থাৎ এর গঠনে এক জোড়া ইলেকট্রনের ঘাটতি রয়েছে। এ কারণে FeCl3 যৌগ NH3 থেকে একজোড়া ইলেকট্রন গ্রহণ করে সন্নিবেশ সমযোজী বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে অষ্টক পূর্ণ করে বলেই এটি অধর্মী।
প্রশ্ন-≥অ্যামোনিয়াকে(NH3) লুইস ক্ষারক বলা হয় কেন? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: লুইস মতবাদ অনুসারে যে সকল যৌগ বা আয়ন তাদের নিঃসঙ্গ ইলেকট্রন জোড় অন্য যৌগ বা আয়নকে প্রদান করতে পারে তাদেরকে লুইস ক্ষারক বলে। NH3 অণুতে N এর বহিঃস্থ শেলে 5টি ইলেকট্রনের মধ্যে তিনটি ইলেকট্রন হাইড্রোজেনের সাথে সমযোজী বন্ধনে আবদ্ধ থাকে এবং এক জোড়া ইলেকট্রন নিঃসঙ্গ অবস্থায় থেকে যায়। তাই NH3 একটি লুইস ক্ষারক।
যেমন: NH3 একজোড়া ইলেকট্রন BF3 কে দান করে সন্নিবেশ সমযোজী বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে BF3 এর অষ্টক পূর্ণ করে বলেই অ্যামোনিয়াকে লুইস ক্ষারক লুইস ক্ষারক।
প্রশ্ন-≥NH3 এবং PH3 এর মধ্যে কোনটি তুলনামূলক তীব্র ক্ষার?
উত্তর: সাধারণত কোনো যৌগের ক্ষারকত্ব উক্ত যৌগের কেন্দ্রীয় পরমাণুর ইলকট্রন ঘনত্ত্বের উপর নির্ভর করে। কেন্দ্রীয় যে পরমাণুর ইলেকট্রন ঘনত্ব বেশি সেটি সহজেই জলীয় দ্রবণে ইলেকট্রন জোড় দান করতে পারে এবং সেটি তীব্র ক্ষার হিসেবে কাজ করে।
NH3 এবং PH3 উভয় যৌগই ক্ষার এবং এদের কেন্দ্রীয় পরমাণু মুক্ত জোড় ইলেকট্রন বহন করে। NH3 যৌগের কেন্দ্রীয় পরমাণু N (নাইট্রোজেন) এর আকার PH3 যৌগের কেন্দ্রীয় পরমাণু P (ফসফরাস) এর চেয়ে ছোট তাই তুলনামূলক ভাবে N এর ইলেকট্রন ঘনত্ত্ব P এর চেয়ে বেশি। এ কারণে NH3 যৌগ সহজেই জলীয় দ্রবণে ইলেকট্রন জোড় দান করে PH3 এর তুলনায় তীব্র ক্ষার হিসেবে আচরণ করে।
প্রশ্ন-≥পানির অস্থায়ী খরতা কিভাবে দূর করা যায়?
পানিতে Ca2+, Mg2+ ও Fe2+ আয়নের ক্লোরাইড ও সালফেট অধিক পরিমাণে দ্রবীভূত থাকলে তখন পানিতে স্থায়ী খরতা হয়। পানিকে ফুটিয়ে স্থায়ী খরতা দূর করা যায় না।কাপড় কাচা সোডা পদ্ধতিতে দূর করা হয়।
এই পদ্ধতিতে পানি কাপড় কাচা সোডা বা সোডিয়াম কার্বনেট (Na2CO3.[10H2O]) যোগ করে পানিতে উপস্থিত Ca2+ এবং Mg2+ আয়নকে অদ্রবণীয় কার্বনেট লবণরূপে অধঃক্ষিপ্ত করা হয়।
CaCl2 + Na2CO3 → CaCO3 + 2NaCl
MgSO4 + Na2CO3 → MgCO3 + Na2SO4
প্রশ্ন-≥পানির স্থায়ী খরতা কিভাবে দূর করা যায়?
পানিতে Ca2+, Mg2+ ও Fe2+ আয়নের বাইকার্বনেট লবণ অধিক দ্রবীভূত থাকার কারণে সৃষ্ট খরতাকে অস্থায়ী খরতা বলে। অস্থায়ী খরতার পানিকে উচ্চ তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করলে বাইকার্বনেট লবণ তাপে বিয়োজিত হয়ে অদ্রবণীয় কার্বনেটরূপে অধঃক্ষিপ্ত হয়। তখন অস্থায়ী খর পানি মৃদু পানিতে পরিণত হয়,খরতা দূর হয়।
অস্থায়ী খর পানিকে তাপ দিলে পানিতে উপস্থিত Ca ও Mg এর বাইকার্বনেট লবণগুলো অদ্রবণীয় কার্বনেট লবণে পরিণত হয়ে অধঃক্ষিপ্ত হয়।
Ca(HCO3)2 → CaCO3 + CO2 + H2O
Mg(HCO3)2 → MgCO3 + CO2 + H2O
MgCO3 পানিতে স্বল্প দ্রবণীয় তাই ফুটনের সাহায্যে Mg(HCO3)2 ঘটিত অস্থায়ী খরতা সম্পূর্ণরূপে দুর
যায় না।
প্রশ্ন-≥পানির BOD ও COD বলতে কী বোঝ?
নির্দিষ্ট পরিমাণ সারফেস ওয়াটারের নমুনায় থাকা দূষক জৈব বস্তুকে 20°C তাপমাত্রায় পাঁচদিন যাবৎ বায়জীবী জীবাণু বা, ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সম্পূর্ণ ডিগ্রেডেশন (biodegradable) বা পচনশীল জৈর বস্তুকে বিয়োজিত করতে পানির DO থেকে যে পরিমাণ O2 ব্যয়িত হয়, তাকে ঐ নমুনা পানির BOD(Biochemical oxygen demand)বলে ।এর ফলে নমুনা পানির DO মান কমে যায়।
BOD = Initial DO – Final DO
পচনশীল দূষক জৈব বস্ত ব্যাকটেরিয়া (C, H, S, N, O) + O2 → CO2 + H2O+ H2S + NH3
প্রতি লিটার সারফেস ওয়াটারের নমুনায় থাকা দূষক পচনশীল জৈব বস্তু ও অপচনশীল জৈব যৌগকে সম্পূর্ণ জারিত করে CO2, NH3, H2S ও H2O তে পরিণত করতে যে পরিমাণ ভরের অক্সিজেন ঐ পানির DO থেকে দরকার হয়, তাকে ঐ পানির COD (Chemical Oxygen Deman বা বলে । একক হলো mg/L বা, ppm (parts per million) প্রকাশ করা হয়।
প্রশ্ন-≥কোন পানির নমুনায় BOD এর মান 6mgL-1 বলতে কী বোঝ?
উত্তর: BOD হলো Biochemical Oxygen Demand যা পানি, বিশুদ্ধতার একটি মাপকাঠি। কোনো নমুনার BOD এর মান 6mg L” বলতে বোঝায় ঐ নমুনা পানির 1L এ দ্রবীভূত থাকা জৈব পদার্থকে অণুজীব দ্বারা জারিত করতে 6 mg অক্সিজেন প্রয়োজন।
প্রশ্ন-≥পানির BOD এর মান 50 ppm বলতে কী বোঝ?
উত্তর: BOD হলো Biochemical Oxygen Demand যা পানি, বিশুদ্ধতার একটি মাপকাঠি। কোনো পানির BOD এর মান 50 ppm 50 mg/L বলতে বোঝায়, ঐ পানির প্রতি লিটারে উপস্থিত পচন জৈব বস্তুকে বিযোজিত করতে 50 mg অক্সিজেনের প্রয়োজন।
প্রশ্ন-≥কোনো নমুনায় BOD অপেক্ষ COD এর মন বড় কেন?
উত্তর: কোনো নমুনায় BOD অপেক্ষা COD এর মান বেশি কারণ, BOD এর ক্ষেত্রে শুধুমাত্র অণুজীব কর্তৃক বিপাকীয় জারণ প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত O2 বোঝায়। অপরদিকে, COD এর ক্ষেতে জন্য কর্তৃক ভাঙন যোগ্য অথবা ভাঙনযোগ্য নয় এমন সকল জৈব জারণে ব্যবহৃত O2 বোঝায়। এজন্য BOD অপেক্ষ COD এর মন বড় হয়।
প্রশ্ন-≥পানি দূষণের প্রধান কারণ শিল্পবর্জ্য কেন? ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ শিল্প কারখানা প্রতি বছর লক্ষ-লক্ষ টন উৎপাদ তৈরি করছে এবং অবশিষ্ট অপদ্রব্য পরিবেশে ছেড়ে দিচ্ছে। সারকারখানা,টেক্সটাইল শিল্প কারখানা, ডায়িং ইন্ডাস্ট্রি তাদের অব্যবহৃত উপাদান পানিতে ছেড়ে দেয়ায় পানির BOD ও COD বেড়ে যাওয়ায় পানির উৎসে (নদী, পুকুর, খাল) অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা যাচ্ছে যা প্রাণীর জীবন ধারণের জন্য ক্ষতিকর। তাছাড়া এসব শিল্প কারখানার বর্জোর কারণে পানির TDS, TSS বেড়ে যাচ্ছে পানির স্বাভাবিক বৈশিষ্টা হারাচ্ছে। ফলশ্রুতিতে পানি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। অর্থাৎপানি দূষণে শিল্প বর্জ্যই প্রধান ভূমিকা পালন করছে।
প্রশ্ন-≥খাবার পানিতে আর্সেনিকের মাত্রা 0.05 ppm বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: খাবার পানিতে আর্সেনিকের মাত্রা 0.05 ppm বলতে বোঝায়, প্রতি লিটার পানিতে 0.05 মিলিগ্রাম আর্সেনিক বিদ্যমান।
প্রশ্ন-≥মানব শরীরে ভারী ধাতু কীভাবে প্রবেশ করে?
উত্তর: গরু-ছাগল প্রভৃতি তৃণভোজী প্রাণী ঘাস, লতা, গুল্মসহ উদ্ভিদের লতাপাতা খায়। আবার মানুষ যেমনভাবে ফল-মূল শাকসবজি খেয়ে থাকে তেমনিভাবে তৃণভোজী প্রাণির মাংস ও দুধ খায়। এভাবে খাদ্যশক্তি উদ্ভিদ থেকে আনুক্রমিকভাবে মানুষের দেহে স্থানান্তরিত হয়। আর খাদ্যশক্তির এ স্থানান্তরের অনুক্রমকেই বলা হয় খাদ্য শৃঙ্খল। বিভিন্ন কারণে এই খাদ্য শৃঙ্খলে ভারী ধাতু যেমন- As, Cr, Pb, cd, Hg ইত্যাদি প্রবেশ করে। মানুষ যখন খাদ্য গ্রহণ করে তখন খাদ্যের মাধ্যমে তা দেহে প্রবেশ করে এবং বিষক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
প্রশ্ন-≥ক্রোমিয়াম কিভাবে পরিবেশকে দূষিত করে?
উত্তর: ক্রোমিয়াম বিভিন্নভাবে পরিবেশকে দূষিত করে। ক্রোমিয়াম কয়লা উৎপাদনের মাধ্যমে বায়ুর গুণমান প্রভাবিত করতে পারে, যা পানি ও মাটি দূষণের কারণ হতে পারে। ক্রোমিয়াম মাটির সাথে জোরাভাবে যুক্ত থাকে এবং পানির সাথে এগুলো জলজ প্রাণীর শরীরে প্রবেশ করে। যা তাদের স্বাস্থ্যের নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করে। এটি উদ্ভিদের উপরেও প্রভাব রাখে।
প্রশ্ন-≥পানিতে আর্সেনিক দূষণের ফলে মানবদেহে এর প্রভাব আলোচনা করো।
উত্তর: আর্সেনিক দূষনের প্রভাব: আর্সেনিকের বিভিন্ন খনিজ ভূগর্ভস্থ পানির মধ্য দিয়ে প্রবেশের সময় As3+, As5+ জারণ অবস্থার সৃষ্টি করে এবং দ্রবীভূত হয়। ভূগর্ভস্থ এ দূষিত পানি উত্তোলন করে কৃষি কাজে ব্যবহারের ফলে বিভিন্ন শস্য ও বীজের মধ্যে অধিশোষণ এবং এনজাইম ক্রিয়ার মাধ্যমে জীবে জমা হয়ে পরবর্তীতে মানব দেহে প্রবেশ করে ক্ষণস্থায়ী প্রভাব যেমন-পালমোনারি ইডিমা সৃষ্টি এবং দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব অ্যানিমিয়া , ফ্যারিনজাইটিস, স্যারিনজাইটিস রোগের মত কঠিন সব ব্যাধির সৃষ্টি হয় ।
প্রশ্ন-≥ভূগর্ভস্থ পানিতে আর্সেনিক দূষণ কিভাবে ঘটে? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: ভূগর্ভস্থ প্রাকৃতিক পানিতে আর্সেনিক যৌগের দ্রাব্যতা মাটিতে Al2O3 ও লোহার অক্সাইড, মাটির pH এবং আর্সেনিকের জারণ বিভব এর ওপর নির্ভর করে। লোহা ও Al-অক্সাইডের সংস্পর্শে আর্সেনিক যৌগের দাব্যতা কমে যায়, অর্থাৎ মাটিতে কাদার পরিমাণ কম হলে প্রকৃতিক পানিতে আর্সেনিকের পরিমাণ বাড়ে। মাটির pH কম, হলে ও আর্সেনিক যৌগে জারণ বিভব কম হলে পানিতে দ্রবীভূত আর্সেনিকের পরিমাণ বাড়ে। এভাবে ভূগর্ভস্থ পানিতে আর্সেনিক দূষণ ঘটে।
প্রশ্ন-≥মানবদেহে আর্সেনিকের প্রভাব ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: নিচে মানবদেহে আর্সেনিকের প্রভাব ব্যাখা করা হলো
- পানীয় ও খাবারের মাধ্যমে আর্সেনিক মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। তারপর আর্সেনিক ফুসফুস, যকৃৎ, মূত্রথলি এবং ত্বকের ক্যান্সার সৃষ্টি করে।
- আর্সেনিক বিক্রিয়ায় বমি, ডায়রিয়া ও পরিপাকতন্ত্রের অপরিবর্তনীয় ক্ষতি হয়।
iii. আর্সেনিকের বিষক্রিয়ায় ত্বকের কেরাটিনাইজেশন ঘটে ও উদ্দীপতা কমে যায়।
- নারীদের বন্ধ্যাত্ব ও মিসক্যারেজ হতে পারে।
প্রশ্ন-≥মানবদেহে ক্রোমিয়ামের প্রভাব ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: মানবদেহে ক্রোমিয়ামের প্রভাব:
১. ক্রোমিয়াম দূষণ দ্বারা মানুষের পরিপাকতন্ত্র , শ্বাসতন্ত্র , প্রজনন তন্ত্র ,রোগ প্রতিরোধ সিস্টেম প্রভৃতি আক্রান্ত হয়।
২. Cr (VI) আয়ন মানুষের শরীরে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কারসিনোজেন হিসেবে গণ্য । মানুষের দেহে ক্রোমিয়ামের প্রবেশ পথ অনুসারে ঐ সব স্থান ক্যান্সারপ্রবণ হয়। যেমন: প্রশ্বাসের মাধ্যমে ক্রোমিয়াম (VI) দূষণ দ্বারা ফুসফুসে ক্যান্সার সৃষ্টি হয়।
৩. বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) জরিপে বাংলাদেশের ঢাকার হাজারিবাগের ট্যানারির প্রায় ৪,০০০ শ্রমিক পরিপাকতন্ত্রে বিভিন্ন রোগ, চর্মরোগ ও অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয় এবং অনধিক পঞ্চাশ বছর আয়ষ্কালে তারা মারা যায়।
৪. ইন্ডিয়ার কানপুরে ট্যানারি শ্রমিকের ওপর জরিপেও দেখা গেছে,ক্রোমিয়াম দূষণে শ্বাসযন্ত্রে রোগাক্রান্ত শ্রমিকের সংখ্যা বেশি।
৫. Cr (III) যৌগের চেয়ে Cr (VI) যৌগের বিষক্রিয়া অধিক মারাত্মক।
৬. অধিক Cr3+ দুষণের ফলে RBC তে লৌহ (Fe2+) শোষণ বাধা পায়।
ফলে অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা রোগ দেখা দেয়। এক্ষেত্রে হিমোগ্লোবিনের হিমে (heme)-এর অষ্টতলকীয় কম্পেক্সের কেন্দ্রস্থ Fe2+ আয়নকে Cr3+ আয়ন প্রতিস্থাপন করে। এতে Q2 লিগ্যান্ডরূপে যুক্ত হতে বাধা পায়।
প্রশ্ন-≥CO কে নীরব ঘাতক বলা হয় কেন?
উত্তর: CO বর্ণহীন, গন্ধহীন গ্যাস। তাই পরিবেশে এর উপস্থিতি মানুষ সহজে বুঝতে পারে না। CO নিঃশ্বাসের সঙ্গে প্রাণিদেহে ঢুকে রক্তের হিমোগ্লোবিনের সঙ্গে অক্সিহিমোগ্লোবিন নামক জটিল যৌগ গঠন করে এবং প্রাণিদেহে অক্সিজেন পরিবহনে ব্যাহত ঘটায়।
HbO2 + CO → HbCO + O2
ফলে বিভিন্ন শ্বাস কষ্টজনিত রোগ সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া O2 পরিবহনে অসুবিধার কারণে শরীরের টিস্যুতে O2 সরবরাহের জন্য হৃদপিণ্ডের উপর চাপ পড়ে। ফলে হৃদরোগে। আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এ ঘটনাটি প্রাণীর অগোচরে ঘটে। এজন্য CO কে নীরব ঘাতক বলা হয়।
প্রশ্ন-≥সেলসিয়াস স্কেলের তাপমাত্রাকে কেলভিন স্কেলে রূপান্তরিত করতে 273 যোগ করতে হয় কেন?
উত্তর: সেলসিয়াস তাপমাত্রার সাথে 273 K যোগ করলে কেলভিন তাপমাত্রা পাওয়া যাবে। কারণ সেলসিয়াস স্কেলের নিম্ন ছিরাঙ্ক 0°C পক্ষান্তরে কেলভিন স্কেলের নিম্ন স্থিরাঙ্ক 273 K। তাই কেলভিন স্কেলে কোনো তাপমাত্রা এর সেলসিয়াস স্কেলের মান অপেক্ষা 273 সংখ্যা মানে বেশি হয়। তাই দেখা যাচ্ছে, সেলসিয়াস স্কেলের তাপমাত্রাকে কেলভিন স্কেলে রুপান্তরিত করতে 273 যোগ করতে হয়।
2 thoughts to “ অনুধাবনমূলক(১ম অধ্যায়)পরিবেশ রসায়”
Awesome
Just wow