প্রশ্ন:- গ্যাসের গতিত্ত্বের স্বীকার্য উদ্ভাবনের কারণ এবং স্বীকার্য গুলো লিখ?
গ্যাসের গতিত্ত্বের স্বীকার্য উদ্ভাবনের কারণ:-
বায়ুমন্ডলের বিভিন্ন গ্যাস যেমন: N2, O2, CO2, এবং H2 এদের নিজ নিজ প্রকৃতি এবং চরিত্র সম্পূর্ন ভিন্ন । এদের রানায়নিক ধর্ম, আনবিক গঠন ও আনবিক সংকেত ভিন্ন । কিছু কিছু ভৌত ধর্মও ভিন্ন । গ্যাস অনুগুলোর মধ্যে ধর্মের এতোসব ভিন্নতা থাকা সত্বেও প্রতিটি গ্যাসই গ্যাস সূত্রাবলী যেমন: বয়েলের সূত্র, চার্লের সূত্র, অ্যাভোগাড্রোর সূত্র এবং গ্যা-লুসাকের সূত্র মেনে চলে । সকল গ্যাসই আর্দশ গ্যাস সমীকরণ PV= nRT দ্বারা নিয়ন্ত্রিত । অণুর ভিন্নতা থাকা সত্তে¡ও সকল গ্যাসের মধ্যে কিছু সদৃশ গুণ থাকবে । যে কারনে এদের ভৌত ধর্ম এবং আচারন একই রকম হবে ।
এ লক্ষ্যে, সর্ব প্রথম গ্রিক দার্শনিক এরিস্টাটল এবং লিউটিক্রস সর্বপ্রথম প্রস্তব করেন গ্যাস আণুগুলো বিচ্ছন্নভাবে ছুটাছুটি করে । অথাৎ গ্যাস অণু গুলো গতিশীল । এ গতিশীলতার ফলে পদার্থের গ্যাসীয় অবস্থায় বেশ কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। এ থেকেই বার্নোলি, ক্লসিয়াস, ম্যাক্সওয়েল এবং বোল্টজম্যান প্রমূখ বিজ্ঞানীগন সকল গ্যাসের ক্ষেত্রেই সমভাবে প্রযোজ্য এমন একটি যান্ত্রিক মডেল উদ্বাবনের ক্ষেত্রে বেশ কিছু প্রস্তাব করেন । এ প্রস্তাবগুলোকেই গ্যাসের গতিতত্ত্ব বলা হয় । প্রকৃত অর্থে কোন তত্ত্ব কে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে কিছু বিষয় প্রথমে স্বাকীর করে নেওয়া প্রায়োজন হয় যা স্বীকার্য নামে পরিচিত ।
গ্যাসের গতিত্ত্বের স্বীকার্য নিম্নরুপ :-
ক. আনবিক স্বীকার্য :
১. গ্রতিটি গ্যাসে অসংখ্যা সূক্ষ কণা আছে। এ কনাগুলো কে অণু বলে।
২. কোন নির্দিষ্ট গ্যাসের অণুসমূহের ভর পরষ্পর সমান। ভিন্ন ভিন্ন গ্যাসের অনুসমূহের ভর ও আকৃতি ভিন্ন ভিন্ন হবে ।
৩. গ্যাস আণুগুলো গোলাকার কঠিন ও সম্পূর্ণ স্থিতিস্থাপক।
৪. গ্যাসের সংকোচনশীলতা উচ্চ ।
৫. গ্যাস অণুগুলোর নিজেদের মধ্যে অথবা গ্যাস অণু ও গ্যাসধারকের দেয়ালের মধ্যে কোনরুপ আকর্ষন বা বির্কষন নেই ।
খ. অণুর আয়তন সংক্রান্ত স্বীকার্য :
৬. গ্যাস অণুগুলোর আয়তন আতিশয় ক্ষুদ্র। প্রকৃত মোট আয়তন গ্যাস ধারকের আয়তনের তুলনায় অতিশয় নগন্য ।
গ.অনুর গতি ও সংঘর্ষ সংক্রান্ত স্বীকার্য :
৭. গ্যাসের অনুগুলোর মধ্যে পরষ্পরে সাথে বা পাত্রের দেওযালের সাথে অবিরাম সংঘর্ষ ঘটে, তখন ঐ সংঘর্ষগুলোও সম্পূর্ন ন্থিতিস্থাপক অথাৎ তাদের গতিশক্তি অভ্যন্তরীন বা অন্য শক্তিতে রুপান্তরিত হয় না । নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় (T) গ্যাসের অণুগগুলোর মোট গতিশক্তি (Ek) স্থির থাকে ।
৮. গ্যাসধারের দেয়ালের সাথে গতিশীল অণুগুলোর অবিরাম সংঘর্ষের ফলে চাপের সৃষ্টি হয় । প্রতি সেকেন্ডে সংঘর্ষ যত বেশি হবে চাপ তত বেশি হবে ।
৯. গ্যাস অণুগুলোর মোট গতিশক্তি তথা প্রতিটি অনুর গড় গতিশক্তি (Ek) গ্যাসের কেলভিন তাপমাত্রার (T) সমানুপাতিক ।
১০. গ্যাস অণুগুলোর গতির ওপর অভিকর্ষ বলের কোন প্রভাব নেই।
১১. অণুগুলোর মধ্যে শুধু ধাক্কার জন্য যে সময় ব্যায় হয় তা দুটি ধাক্কার মধ্যবর্তী সময়ের তুলনায় অতি নগন্য এবং দুই ধাক্কার মধ্যবর্তী দূরত্বের গড়মানকে গড় মুক্ত পথ বলে ।