হাইড্রেশন শক্তি (Hydration Energy) : প্রতি মোল পরিমাণ ধনাত্মক ও ঋণাত্মক আয়নের সাথে পানি অণুর সংযোগের সময় নির্গত শক্তিকে হাইড্রেশন শক্তি বলে । এ নির্গত তাপ শক্তির প্রভাবে NaCl এর কেলাস-ল্যাটিস থেকে আয়নগুলো পৃথক হয়ে পানিতে দ্রবীভূত থাকে। হাইড্রেশন শক্তি সবসময় ঋণাত্মক হয়। Na+ আয়ন ও Cl– আয়নের হাইড্রেশন শক্তি যথাক্রমে – 406kJ mol-1 এবং – 363 kJ mol-1 |
Na+ + 6H2O → Na+.6 H2O ∆H = – 406kJ mol-1
Cl– + 6H2O → Cl–.6H2O ∆H = – 363 kJ mol-1
সবচেয়ে ছোট ধনাত্মক আয়ন Li+ এর হাইড্রেশন শক্তি হয় -520 kJ mol-1 এবং সবচেয়ে ছোট ঋণাত্মক আয়ন F– এর হাইড্রেশন শক্তি হয় – 524 kJ mol-1 ।

কেলাস ল্যাটিস (Crystal Latice) : সব আয়নিক যৌগ কেলাসাকার কঠিন পদার্থ হয়। কক্ষ তাপমাত্রায় কোনো আয়নিক যৌগ তরল বা গ্যাসীয় অবস্থায় থাকে না। কেলাস গঠনকালে সমধর্মী আয়নগুলো পরস্পরকে বিকর্ষণ এবং বিপরীতধর্মী আয়নগুলো পরস্পরকে আকর্ষণ করে স্থির বৈদ্যুতিক আকর্ষণ বল দ্বারা নির্দিষ্ট স্থানে ত্রিমাত্রিকভাবে আবদ্ধ হয়ে পড়ে। উভয় প্রকার আয়নগুলোর কেন্দ্রবিন্দুগুলোকে কাল্পনিক রেখা দ্বারা যুক্ত করলে মৌমাছির মৌচাকের মতো যে জালিকা সৃষ্টি হয়, তাকে কেলাসের জালিকা বা কেলাস ল্যাটিস বলে। কেলাস জালিকা বিভিন্ন জ্যামিতিক আকৃতির হতে পারে।
ল্যাটিস শক্তি (Latice Energy) : আয়নিক যৌগের কেলাস গঠনকালে বিপরীত আধানযুক্ত ক্যাটায়ন ও অ্যানায়নগুলো স্থির বৈদ্যুতিক আকর্ষণ বলের দ্বারা আকৃষ্ট হয়ে সম্ভাব্য নিকটে আসে। ফলে এদের মধ্যেকার স্থিতিশক্তির মান অপেক্ষাকৃতভাবে হ্রাস পায়। যে পরিমাণ স্থিতি শক্তি হ্রাস পায়, ঠিক সমপরিমাণ শক্তি ঐ যৌগের কেলাস থেকে নির্গত হয় তাকে ঐ আয়নিক যৌগের কেলাস ল্যাটিস শক্তি বলে। যেমন:
Na+(g) + Cl+(g) → NaCl (s); ∆H = – 788 KJmol-1
NaCl এর ল্যাটিস শক্তি = – 788 KJmol-1 এবং NaCl এর ল্যাটিস ভাঙার শক্তি হবে = + 788 KJmol-1 উল্লেখ্য কেলাসে ল্যাটিস গঠন প্রক্রিয়া হলো তাপপাৎপাদী; তাই ল্যাটিস গঠন শক্তির মান ঋণাত্মক হয়। বিপরীতভাবে কেলাস ল্যাটিস ভাঙ্গার শক্তি হলো তাপশোষী প্রক্রিয়া; তাই এটির মান ধনাত্মক হয়। ল্যাটিস ভাঙ্গা প্রক্রিয়ায় শোষিত তাপ শক্তিকে ল্যাটিস এনথালপি বলে।
সংজ্ঞা : গ্যাসীয় অবস্থায় ক্যাটায়ন ও অ্যানায়ন থেকে এক মোল (mole) পরিমাণ আয়নিক যৌগের কেলাস গঠনকালে যে পরিমাণ শক্তি নির্গত বা মুক্ত হয়, তাকে ঐ আয়নিক যৌগের কেলাস ল্যাটিস শক্তি বলে । ল্যাটিস শক্তি হলো কেলাসের Poential energy। তাই কেলাস গঠনের সময় নির্গত শক্তির পরিমাণ যত বেশি হয়, ঐ আয়নিক কেলাস ততো বেশি সুদৃঢ় হয়।