একটি সাধারণ ঘটনা হলো জারণ-বিজারণ বিক্রিয়ায় জারক ইলেকট্রন গ্রহণ করে তাই জারকের জারন সংখ্যা হ্রাস পায় এবং বিজারক ইলেকট্রন ত্যাগ করে তাই বিজারকের জারণ সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। দর্শক আয়নগুলোর জারণ মানের কোনো পরিবর্তন হয় না। কিন্তু কিছু কিছু জারণ-বিজারণ বিক্রিয়ার ব্যতিক্রমী ঘটনা ঘটে।
যেমন : যৌগের একই পরমাণু একই বিক্রিয়ায় একসাথে জারিত হয়। আবার একটি যৌগের দুটি পরমাণুর মধ্যে একই বিক্রিয়ায় একটি পরমাণু জারিত হলে অপর পরমাণু বিজারিত হয় । এরূপ জারন-বিজারন বিক্রিয়াকে ভিন্ন ভিন্ন নামে ডাকা হয় ।
যেমন : অসমাঞ্জস্য বিক্রিয়া (Disproportionnation Reaction) : যে সকল জারণ-বিজারণ বিক্রিয়কের একই পরমাণু একই সাথে জারিত হয় এবং বিজারিত হয় সেই সকল Redox বিক্রিয়াগুলোকে অসমাঞ্জস্য বিক্রিয়া বলে ।
যেমন : গাঢ় NaOH এর সাথে Cl2 কে উত্তপ্ত কলে একটি Cl পরমাণু (জারণ মান শূন্য) বিজারিত হয়ে -1 জারণ সংখ্যা বিশিষ্ট NaCl যৌগ তৈরী করে এবং অপর Cl পরমাণু (জারণ মান শূন্য) জারিত হয়ে +5 জারণ সংখ্যা বিশিষ্ট NaClO3যৌগ তৈরী করে ।

সামঞ্জস্যতা বিক্রিয়া (Comproportionation বা synproportionation Reaction) : যে সকল বিক্রিয়ায় দুটি ভিন্ন বিক্রিয়কের মধ্যে বিদ্যমান একটি একটি পরমাণু যার জারণ সংখ্যা উভয় বিক্রিয়কের মধ্যে ভিন্ন কিন্তু জারণ-বিজারণ বিক্রিয়া শেষে একটি অভিন্ন জারণ সংখ্যা বিশিষ্ট রাসায়নিক সত্ত্বায় পরিণত হয় তাদেরকে সামঞ্জস্যতা বিক্রিয়া বলে।
যেমন: Pb পরমাণু এবং PbO2 উভয় পরমাণু PbSO4 এ পরিণত হয়। এক্ষেত্রে Pb পরমাণু (জারণ মান শূন্য) বিজারিত হয়ে +2 জারণ সংখ্যা বিশিষ্ট PbSO4 যৌগ তৈরী করে এবং PbO2 যৌগে Pb পরমাণু (জারণ মান +4) জারিত হয়ে +2 জারণ সংখ্যা বিশিষ্ট PbSO4 যৌগ তৈরী করে ।


স্বয়ংক্রিয় জারণ-বিজারণ বিক্রিয়া (Auto Redox Reaction) : যে সকল জারণ-বিজারণ বিক্রিয়ায় একটি অবস্থিত দুটি পরমাণুর একটি জারিত হয় এবং অপরটি বিজারিত হয়, সে সকল জারন-বিজারিন বিক্রিয়াকে অটো বা স্বয়ংক্রিয় জারন বিজারণ বিক্রিয়া বলে।
Pb(NO3)2 কে উত্তপ্ত করলে Pb(NO3)2 যৌগের O পরমাণু (জারণ মান -2) জারিত হয়ে +0 জারণ সংখ্যা বিশিষ্ট O2 অণু তৈরী করে এবং অপর পক্ষে Pb(NO3)2 যৌগের N পরমাণু (জারণ মান +5) বিজারিত হয়ে +4 জারণ সংখ্যা বিশিষ্ট NO2 যৌগ তৈরী করে ।

বিরঞ্জন বিক্রিয়া (Bleaching Reaction) : যে সকল রাসায়নিক পদার্থ কোনো রঙ্গীন বস্তুকে Redox বিক্রিয়া মাধ্যমে বর্ণহীন করে দেয় তাদেরকে বিরঞ্জক বলে। আর যে বিক্রিয়ার মাধ্যমে এই প্রক্রিয়াটি চলে সেই বিক্রিয়াকে বিরঞ্জন বিক্রিয়া বলে। যেমন : ব্লিচিং পাউডার বা Cl2 বা SO2 দ্বারা রঙ্গীন বস্তুর বিরঞ্জন।
i) Ca(OCl)Cl + H2O → C (OH)2 + Cl2 + [O]
(ব্লিচিং পাউডার)
রঙ্গীন বস্তু + [O] → বর্ণহীন (জারনের মাধ্যমে)
ii) Cl2 + H2O → 2HCl + [O]
রঙ্গীন বস্তু + [O] → বর্ণহীন (জারনের মাধ্যমে)
ii) SO2 + 2H2O → H2SO4 + 2[H]
রঙ্গীন বস্তু + [H] → বর্ণহীন (বিজারণের মাধ্যমে)