জারণ বিক্রিয়া: যে সকল রাসায়নিক বিক্রিয়ায় কোনো রাসায়নিক সত্তা ইলেকট্রন দান করে তাদেরকে জারণ বিক্রিয়া

যেমন: Na(2, 8, 1) – e → Na+ (2,8) ………………………(i)

বিজারণ বিক্রিয়া: যে সকল রাসায়নিক বিক্রিয়ায় কোনো রাসায়নিক সত্তা ইলেকট্রন গ্রহণ করে তাদেরকে বিজারণ বিক্রিয়া বলে।

যেমন: Cl (2, 8, 7) + e → Cl (2, 8, 8) …………………..(ii)

ইলেকট্রন দানে সৃষ্ট জারণ বিক্রিয়া ও ইলেকট্রন গ্রহণে সৃষ্ট বিজারণ বিক্রিয়ার যোগফল [i+ii] ই হলো একটি জারণ-বিজারণ পূর্ণ বিক্রিয়া। যেমন:

Na – e → Na+  (জারণ বিক্রিয়া)

Cl + eCl   (বিজারণ বিক্রিয়া)

—————————————————————-———————

মোট বিক্রিয়া: Na +Cl → NaCl (জারণ-বিজারণ বিক্রিয়া)

বিজারক : জারণ-বিজারণ বিক্রিয়ায় যে সকল রাসায়নিক সত্তা ইলেকট্রন দান করে তাদেরকে বিজারক বলে। যে কোন বাসায়নিক বিক্রিয়ায় বিজারক নিজে জারিত হয়ে অন্যকে বিজারিত করে। যেমন: H2, সকল ধাতু, H2S, HI, KI, Na2S2O3, H2O2, ধাতুর, আস আয়ন ইত্যাদি।

জারক: জারণ-বিজারণ বিক্রিয়ায় যে সকল রাসায়নিক সত্তা ইলেকট্রন গ্রহণ করে তাদেরকে জারক বলে। যে কোন বাসায়নিক বিক্রিয়ায় জারক নিজে বিজারিত হয়ে অন্যকে জারিত করে। যেমন: O2, X2, O3, HNO3, HNO3, H2SO4(গাঢ়), KMnO4, K2Cr2O7, ধাতুর ইক আয়ন ইত্যাদি।

*** আধুনিক মতবাদ অনুসারে জারণ-বিজারণ যুগপৎ ঘটে:

যে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় কোনো রাসায়নিক সত্তা ইলেকট্রন দান করে তাকে জারণ বিক্রিয়া বলে এবং যে রাসায়নিক সত্তা ইলেকট্রন দান করে সে বিজারক।
যেমন: Na – e → Na+ ………………………(i)

বিক্রিয়াটি একটি জারণ বিক্রিয়া এবং Na ইলেকট্রন দান করায় এটি হলো বিজারক।

অপর দিকে যে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় কোনো রাসায়নিক সত্তা ইলেকট্রন গ্রহণ করে তাকে বিজারণ বিক্রিয়া বলে এবং যে রাসায়নিক সত্তা ইলকট্রন গ্রহণ করে সে জারক।

যেমন: Cl + e → Cl–  ………………………….(ii)

বিক্রিয়াটি একটি বিজারণ বিক্রিয়া এবং Cl  ইলেকট্রন গ্রহণ করায় এটি হলো জারক।

যেহেতু কোনো বিক্রিয়ায় ইলেকট্রন কখনোই বিমুক্ত অবস্থায় থাকে না, তাই জারণ-বিক্রিয়ায় বিজারক কর্তৃক দানকৃত ইলেকট্রন অবশ্যই জারণ-বিজারণ বিক্রিয়ায় জারক কর্তৃক গৃহীত হয়। অর্থাৎ ইলেকট্রনের আদান-প্রদান তথা জারণ-বিজারণ সব সময় একই সাথে তথা যুগপৎ ঘটে। যেমন:

Na – e → Na+ (জারণ)

Cl + e → Cl (বিজারণ)

—————————————————————-———————

মোট বিক্রিয়া: Na +Cl → NaCl  (জারণ-বিজারণ যুগপৎ বিক্রিয়া)

**** জারণ ও বিজারণ এর মধ্যে পার্থক্য লিখ ?

জারণ বিজারণ
১. যে বিক্রিয়ায় e ত্যাগ হয় তাকে জারণ১. যে বিক্রিয়ায় e গ্রহণ হয় তাকে বিজারণ বলে ।
২.H ত্যাগ হয় এতে উহার সংখ্যা হ্রাস পায়।২.H এর গ্রহণ হয় বা H এর সংখ্যা বেড়ে যায়।
৩. O এর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।৩. O এর সংখ্যা হ্রাস পায়।
৪. এ বিক্রিয়াতে বিজারক থাকে।৪. এ বিক্রিয়াতে জারক থাকে।
৫. জারণ সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।৫. জারণ সংখ্যা হ্রাস পায়।
৬.ধনাত্মাক চার্জ বৃদ্ধি পায়।৬.ঋনাত্মাক চার্জ বৃদ্ধি পায়।

**** জারক ও বিজারকের মধ্যে পার্থক্য লিখ ?

জারক বিজারক
১. যে রাসায়নিক সত্তা ইলেকট্রন গ্রহণ করে, তাকে জারক বলে।১. যে রাসায়নিক সত্তা ইলেকট্রন ত্যাগ করে তাকে বিজারক বলে।
২. বিজারণ বিক্রিয়ায় অংশ নেয়।২. জারণ বিত্রিয়ায় অংশ নেয়।
৩. সাধারণত এর জারণ সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।৩. সাধারণত এর জারণ সংখ্যা হ্রাস পায়।
৪. সকল অধাতু জারক।৪. সকল অধাতুর ঋণাত্মক আধানসমূহ বিজারক।
৫. Cl, Br, I, Na+, K+, Li+ ইত্যাদি।৫. Cl, Br, I, Na, K, Li, Rb ইত্যাদি।
৬. একটি মৌলের দুটি আয়ন থাকলে বড় আধানের আয়নটি জারক। যেমন : Fe3+৬. একটি মৌলের দুটি আয়ন থাকলে ছোট আধানের আয়নটি জারক। জারক। যেমন : Fe2+

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *