প্রশ্ন: মুদ্রা ধাতু (Coinage metals) কী?
উত্তর: পর্যায় সারণির গ্রুপ IB-তে অন্তর্ভুক্ত কপার (Cu), সিলভার (Ag) এবং গোল্ল্ডকে (Au) মুদ্রা ধাতু বলা হয়। প্রাচীনকাল হতে এ ধাতুগুলো মুদ্রা তৈরিতে ব্যবহার হয়ে আসছে বলে এরূপ নামকরণ করা হয়।
এই গ্রুপের মৌলগুলোর যোজ্যতা স্তরের ইলেকট্রন বিন্যাস হলো (n-1)d10ns1। সর্ববহিস্থ শক্তিস্তরে একটিমাত্র ns1 ইলেকট্রন থাকায় এদেরকে গ্রুপ-I এবং শেষ ইলেকট্রনটি d অরবিটালে প্রবেশ করায় B উপশ্রেণিতে অর্থাৎ গ্রুপ-IB তে রাখা হয়েছে।
ক.মুদ্রা ধাতুসমূহের রাসায়নিক ধর্মাবলি নিম্নরূপ :
i. এরা পরিবর্তনশীল জারণ অবস্থা দেখায়।
ii. সাধারণ তাপে এরা বায়ুতে সুস্থিত থাকে।
iii. সাধারণ তাপমাত্রায় এরা পানির সাথে বিক্রিয়া করে না।
iv. সাধারণ অবস্থায় এরা ক্ষারের সাথে বিক্রিয়া করে না।
v. এসিডের সাথে বিক্রিয়ায় Cu এবং Ag লবণ উৎপন্ন করে। গোল্ড অ্যাকুয়া-রেজিয়ায় দ্রবীভূত হয়।
খ. মুদ্রা ধাতুর (Coinage metals) উৎস (Sources) :
মুদ্রা ধাতুসমূহের উৎস হলো আকরিক।
ক. কপারের প্রধান আকরিকগুলো নিম্নরূপ :
i. কপার-পাইরাইটস্ – CuFeS2
ii. ম্যালাকাইট – CuCO3.Cu(OH)2
iii. কিউপ্রাইট – Cu2O
iv. চ্যালকোসাইট – Cu2S
v. অ্যাজুরাইট – 2CuCO3.Cu(OH)2
খ. সিলভারের প্রধান আকরিকগুলো নিম্নরূপ :
i. আরজেনটাইট – Ag2S
ii. পাইরারজিরাইট – 3Ag2S.Sb2S3
iii. হর্ণ সিলভার – AgCl
iv. প্রাউস্টাইট – Ag3AsS3
গ. গোন্ডের প্রধান আকরিক :
প্রকৃতিতে গোল্ড মুক্ত অবস্থায় বিভিন্ন আকরিকের সাথে পাওয়া যায়। অরিফেরাস শিলাতে আয়রন পাইরাইটস্ জাতীয় সালফাইড আকরিকের সঙ্গে গোল্ড পাওয়া যায়। এছাড়া ক্যালভেরাইট (AuTe2), সিলভেনাইট (Ag.Au)Te2 প্রভৃতি আকরিকে গোল্ড পাওয়া যায়।
মুদ্রা ধাতুসমূহের ব্যবহার (Uses of coinage metals)
ক. কপারের ব্যবহার :
i. বৈদ্যুতিক তার, টেলিফোনের তার তৈরিতে কপার প্রচুর পরিমাণে ব্যবহৃত হয়।
ii. ইলেকট্রোপ্লেটিং কাজে ব্যবহার হয়।
iii. মুদ্রা তৈরিতে এর ব্যবহার আছে।
iv. থালাবাসন তৈরিতে এর ব্যবহার আছে।
v. বিভিন্ন সংকর ধাতু যেমন পিতল (Cu – 60 – 80% এবং Zn – 20 – 40%), ব্রোঞ্জ (Cu –75 – 90% এবং Sn – 10 – 25%) তৈরিতে ব্যবহার হয়।
খ. সিলভারের ব্যবহার :
i. সিলভার মূলত মুদ্রা তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
ii. বাসন-কোসন এবং গহনা তৈরিতে এর প্রচুর ব্যবহার হয়।
iii. ফটোগ্রাফিতে প্রচুর সিলভার ব্যবহৃত হয়।
iv. আয়না তৈরিতে সিলভার ব্যবহার।
v. দাঁতের জন্য সংকর তৈরিতে এর ব্যবহার আছে।
গ.গোন্ডের ব্যবহার :
i.প্রধানত অলংকার তৈরিতে প্রচুর পরিমাণে ব্যবহার হয়।
ii. মুদ্রা তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।
iii. তড়িৎ প্রলেপনে গোল্ডের ব্যবহার আছে।
iv. পার্পল অব ক্যাসিয়াস রঞ্জক তৈরিতে গোন্ড ব্যবহার হয়। কাঁচ ও পোর্সেলিন তৈরিতে এই রঞ্জক ব্যবহার হয়।