প্রশ্ন: পদার্থ কী?
যে বস্তুর নির্দিষ্ট ভর আছে এবং জায়গা দখল করে তাকে পদার্থ বলে।
প্রশ্ন: কঠিন পদার্থ কী? এর বৈশিষ্ট লিখ।
যে সকল পদার্থের নির্দিষ্ট ভর, নির্দিষ্ট আকার এবং নির্দিষ্ট আয়তন থাকে তদের কঠিন পদার্থ বলে।
সব পদার্থের কণাগুলোর মধ্যেই এক ধরনের আকর্ষণ বল থাকে। যেমন-কক্ষ তাপমাত্রায় চিনি, খাদ্য লবণ, মারর্বেল ইত্যাদি কঠিন অবস্থায় থাকে।
বৈশিষ্ট :
১. কঠিন পদার্থের নির্দিষ্ট ভর, নির্দিষ্ট আকার এবং নির্দিষ্ট আয়তন আছে ।
২. কঠিন পদার্থের কণাগুলোর মধ্যে আন্তঃকণা আকর্ষণ বল সবচেয়ে বেশি। এ কারণে কঠিন পদার্থের কণাগুলো খুব কাছাকাছি এবং নির্দিষ্ট অবস্থানে থাকে, ফলে কঠিন পদার্থের নির্দিষ্ট আকার হয় ।
৩. কঠিন পদার্থের উপর চাপ প্রয়োগ করলে এরা সংকুচিত হয় না।
৪. তাপমাত্রা বাড়ালে কঠিন পদার্থের আয়তন খুবই কম পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
প্রশ্ন: তরল পদার্থ কী? এর বৈশিষ্ট লিখ।
যে সকল পদার্থের নির্দিষ্ট ভর ও নির্দিষ্ট আয়তন আছে কিন্তু নির্দিষ্ট কোনো আকার নেই তদের তরল পদার্থ বলে। যেমন- কক্ষ তাপমাত্রায় নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, কার্বন ডাই-অক্সাইড ইত্যাদি গ্যাসীয় অবস্থায় থাকে।
বৈশিষ্ট :
১. তরল পদার্থের নির্দিষ্ট ভর ও নির্দিষ্ট আয়তন আছে কিন্তু নির্দিষ্ট কোনো আকার নেই ।
২. তরলের কণাগুলো কঠিন পদার্থের কণাগুলো চেয়ে তুলনামূলকভাবে বেশি দূরত্বে থাকায় এদের মধ্যে আন্তঃকণা আকর্ষণ বল কঠিনের চেয়ে কম হয়।
৩.তরল পদার্থকে চাপ প্রয়োগ করলে এদের আয়তন হ্রাস পায় না।
৪. তরল পদার্থকে তাপ প্রয়োগ করলে তরল পদার্থের আয়তন বৃদ্ধি পায়। এই আয়তন বৃদ্ধির পরিমাণ কঠিন পদার্থের চেয়ে বেশি৷
প্রশ্ন: গ্যাসীয় পদার্থ কী? এর বৈশিষ্ট লিখ।
যে সকল পদার্থের নিদিষ্ট ভর আছে কিন্তু নির্দিষ্ট আকার কিংবা নির্দিষ্ট আয়তন নেই তদের গ্যাসীয় পদার্থ বলে। যেমন- কক্ষ তাপমাত্রায় পানি, তেল, কেরোসিন ইত্যাদি তরল অবস্থায় থাকে।
বৈশিষ্ট :
১. গ্যাসীয় পদার্থের নিদিষ্ট ভর আছে কিন্তু নির্দিষ্ট আকার কিংবা নির্দিষ্ট আয়তন নেই ।
২.গ্যাসীয় পদার্থের কণাগুলো কঠিন ও তরলের চেয়ে অনেক বেশি দূরে দূরে অবস্থান করে বলে এদের আন্তঃকণা আকর্ষণ বল খুবই কম।
৩. গ্যাসীয় পদার্থের আন্তঃকণা দূরত্ব বেশি থাকায় গ্যাসীয় উপর সামান্য চাপ প্রয়োগ করলে গ্যাসীয় পদার্থের আয়তন অনেক কমে যায়।
৪. গ্যাসীয় পদার্থের আন্তঃকণা আকর্ষন কম থাকায় গ্যাসীয় তাপ প্রয়োগ করলে গ্যাসীয় পদার্থের আয়তন অনেক বেড়ে যায়।
প্রশ্ন: কণা গতিতত্ত্ব কী?
আন্তঃকণা আকর্ষণ শক্তি এবং কণাগুলোর গতিশক্তি দিয়ে পদার্থের কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় অবস্থা ব্যাখ্যা করার তত্ত্বকেই কণার গতিতত্ত্ব বলা হয়।
ব্যাখ্যা: কঠিন পদার্থকে তাপ দেওয়া হলে কণাগুলো তাপশক্তি গ্রহণ করে কাঁপতে থাকে। যদি আরও বেশি তাপ দেওয়া হয় তাহলে কণাগুলো এত বেশি কাঁপতে থাকে যে আন্তঃকণা আকর্ষণ শক্তি কমে যায় এবং কিছুটা গতিশক্তি প্রাপ্ত হয়। পদার্থের এই অবস্থাকে তরল অবস্থা বলে। তরলের নির্দিষ্ট আয়তন থাকলেও নির্দিষ্ট আকার থাকে না। তরল অবস্থার পদার্থকে আরো বেশি তাপ দেওয়া হলে কণাগুলো তাপশক্তি নিয়ে গতিশক্তি বৃদ্ধি করতে থাকে এবং এক সময় গতিশক্তি এত বেড়ে যায় যে কণাগুলো আন্তঃকণা আকর্ষণ শক্তি থেকে প্রায় মুক্ত হয়ে বিক্ষিপ্তভাবে ছুটতে থাকে। এই অবস্থাকে বলে গ্যাসীয় অবস্থা। গ্যাসীয় অবস্থায় পদার্থের আর কোনো নির্দিষ্ট আয়তন থাকে না। তাকে যে আয়তনের পাত্রে রাখা হবে কণাগুলো সেই আয়তনেই ছোটাছুটি করতে পারবে। গ্যাসীয় অবস্থায় পৌঁছানোর পর যদি আরও তাপ দেওয়া হয় তখন কণাগুলো আরও জোরে ছুটতে থাকবে অর্থাৎ গতিশক্তি আরও বেড়ে যাবে।
প্রশ্ন: ব্যাপন কী?
কোনো মাধ্যমে কঠিন, তরল ও বায়বীয় পদার্থের স্বতঃস্ফুর্ত ও সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ার প্রক্রিয়াকে ব্যাপন বলে। ব্যাপন প্রক্রিয়ায় কঠিন, তরল কিংবা বায়বীয় পদার্থ উচ্চ ঘনমাত্রার স্থান থেকে নিম্ন ঘনমাত্রার স্থানের দিকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ছড়িয়ে পড়ে।কোনো পদার্থ ছড়িয়ে পড়তে সময় কম লাগলে ঐ পদার্থের ব্যাপন হার বেশি এবং কোনো পদার্থ ছড়িয়ে পড়তে বেশি সময় লাগলে ঐ পদার্থের ব্যাপন হার কম। যেমন: ঘরের এক কোণে কোনো একটি সুগন্ধির শিশির মুখ খুলে রাখলে কিছুক্ষণের মধ্যে সারা ঘরে সুগন্ধ ছড়িয়ে পড়ে।
প্রশ্ন: HCl অপেক্ষা NH3 এর ব্যাপন হার বেশি কেন?
কোনো মাধ্যমে কঠিন, তরল ও বায়বীয় পদার্থের স্বতঃস্ফুর্ত ও সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ার প্রক্রিয়াকে ব্যাপন বলে। ব্যাপন প্রক্রিয়ায় কঠিন, তরল কিংবা বায়বীয় পদার্থ উচ্চ ঘনমাত্রার স্থান থেকে নিম্ন ঘনমাত্রার স্থানের দিকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ছড়িয়ে পড়ে। ব্যাপন হার বস্তুর আণবিক ভর ও ঘনত্বে উপর নির্ভর । যে বস্তুর আণবিক ভর ও ঘনত্ব যত বেশি তার ব্যাপন হার তত কম, ব্যাপন সময় বেশি এবং যে বস্তুর আণবিক ভর ও ঘনত্ব যত কম তার ব্যাপন হার তত বেশি, ব্যাপন সময় কম। প্রশ্নে HCl এবং NH3 এর আণবিক ভর 36.5 এবং 17 । HCl এর আণবিক ভর অপেক্ষা NH3 এর আণবিক ভর কম হওয়ায় এর ব্যাপন হার বেশি এবং ব্যাপন সময় কম।
প্রশ্ন: O2 অপেক্ষা N2 এর ব্যাপন হার বেশি কেন?
কোনো মাধ্যমে কঠিন, তরল ও বায়বীয় পদার্থের স্বতঃস্ফুর্ত ও সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ার প্রক্রিয়াকে ব্যাপন বলে। ব্যাপন প্রক্রিয়ায় কঠিন, তরল কিংবা বায়বীয় পদার্থ উচ্চ ঘনমাত্রার স্থান থেকে নিম্ন ঘনমাত্রার স্থানের দিকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ছড়িয়ে পড়ে। ব্যাপন হার বস্তুর আণবিক ভর ও ঘনত্বে উপর নির্ভর । যে বস্তুর আণবিক ভর ও ঘনত্ব যত বেশি তার ব্যাপন হার তত কম, ব্যাপন সময় বেশি এবং যে বস্তুর আণবিক ভর ও ঘনত্ব যত কম তার ব্যাপন হার তত বেশি, ব্যাপন সময় কম। প্রশ্নে O2 এবং N2 এর আণবিক ভর 32 এবং 28 । O2 এর আণবিক ভর অপেক্ষা N2 এর আণবিক ভর কম হওয়ায় এর ব্যাপন হার বেশি এবং ব্যাপন সময় কম।
প্রশ্ন: He অপেক্ষা H2 এর ব্যাপন হার বেশি কেন?
কোনো মাধ্যমে কঠিন, তরল ও বায়বীয় পদার্থের স্বতঃস্ফুর্ত ও সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ার প্রক্রিয়াকে ব্যাপন বলে। ব্যাপন প্রক্রিয়ায় কঠিন, তরল কিংবা বায়বীয় পদার্থ উচ্চ ঘনমাত্রার স্থান থেকে নিম্ন ঘনমাত্রার স্থানের দিকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ছড়িয়ে পড়ে। ব্যাপন হার বস্তুর আণবিক ভর ও ঘনত্বে উপর নির্ভর । যে বস্তুর আণবিক ভর ও ঘনত্ব যত বেশি তার ব্যাপন হার তত কম, ব্যাপন সময় বেশি এবং যে বস্তুর আণবিক ভর ও ঘনত্ব যত কম তার ব্যাপন হার তত বেশি, ব্যাপন সময় কম। প্রশ্নে He এবং H2 এর আণবিক ভর 4 এবং 2 । He এর আণবিক ভর অপেক্ষা H2 এর আণবিক ভর কম হওয়ায় এর ব্যাপন হার বেশি এবং ব্যাপন সময় কম।
প্রশ্ন: CO2 অপেক্ষা O2 এর ব্যাপন হার বেশি কেন?
কোনো মাধ্যমে কঠিন, তরল ও বায়বীয় পদার্থের স্বতঃস্ফুর্ত ও সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ার প্রক্রিয়াকে ব্যাপন বলে। ব্যাপন প্রক্রিয়ায় কঠিন, তরল কিংবা বায়বীয় পদার্থ উচ্চ ঘনমাত্রার স্থান থেকে নিম্ন ঘনমাত্রার স্থানের দিকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ছড়িয়ে পড়ে। ব্যাপন হার বস্তুর আণবিক ভর ও ঘনত্বে উপর নির্ভর । যে বস্তুর আণবিক ভর ও ঘনত্ব যত বেশি তার ব্যাপন হার তত কম, ব্যাপন সময় বেশি এবং যে বস্তুর আণবিক ভর ও ঘনত্ব যত কম তার ব্যাপন হার তত বেশি, ব্যাপন সময় কম। প্রশ্নে CO2 এবং O2 এর আণবিক ভর 44 এবং 32 । CO2 এর আণবিক ভর অপেক্ষা O2 এর আণবিক ভর কম হওয়ায় এর ব্যাপন হার বেশি এবং ব্যাপন সময় কম।
প্রশ্ন: HCl অপেক্ষা NH3 এর ব্যাপন হার বেশি কেন?
কোনো মাধ্যমে কঠিন, তরল ও বায়বীয় পদার্থের স্বতঃস্ফুর্ত ও সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ার প্রক্রিয়াকে ব্যাপন বলে। ব্যাপন প্রক্রিয়ায় কঠিন, তরল কিংবা বায়বীয় পদার্থ উচ্চ ঘনমাত্রার স্থান থেকে নিম্ন ঘনমাত্রার স্থানের দিকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ছড়িয়ে পড়ে। ব্যাপন হার বস্তুর আণবিক ভর ও ঘনত্বে উপর নির্ভর । যে বস্তুর আণবিক ভর ও ঘনত্ব যত বেশি তার ব্যাপন হার তত কম, ব্যাপন সময় বেশি এবং যে বস্তুর আণবিক ভর ও ঘনত্ব যত কম তার ব্যাপন হার তত বেশি, ব্যাপন সময় কম। প্রশ্নে HCl এবং NH3 এর আণবিক ভর 36.5 এবং 17 । HCl এর আণবিক ভর অপেক্ষা NH3 এর আণবিক ভর কম হওয়ায় এর ব্যাপন হার বেশি এবং ব্যাপন সময় কম । অপর পক্ষে NH3 এর আণবিক ভর অপেক্ষা HCl এর আণবিক ভর বেশি হওয়ায় এর ব্যাপন হার কম এবং ব্যাপন সময় বেশি ।
একটি সুষম প্রস্থচ্ছের ক্ষেত্রফল বিশ্ষ্ট নলের এক প্রান্তে হাইড্রোক্লোরিক এসিড দ্রবণে সিক্ত তুলা এবং অপর প্রান্তে অ্যামোনিয়াম হাইড্রোক্সাইড দ্রবণে সিক্ত তুলা দিয়ে বন্ধ করা হল। এখানে হাইড্রোক্লোরিক এসিড দ্রবণ থেকে হাইড্রোজেন ক্লোরাইড গ্যাস এবং অ্যামোনিয়াম হাইড্রোক্সাইড (HCl) দ্রবণ থেকে অ্যামোনিয়া (NH3) গ্যাস ব্যাপিত হবে। কিছুক্ষণের মধ্যে দেখতে পাবে কাচনলের ভিতরে হাইড্রোজেন ক্লোরাইড গ্যাস ও অ্যামোনিয়া গ্যাস পরস্পরের সাথে বিক্রিয়া করে অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইডের (NH4Cl) সাদা ধোঁয়ার সৃষ্টি করেছে। সাদা ধোঁয়ার অবস্থান কাচনলের ঠিক মাঝামাঝি হবে না। এটি হাইড্রোক্লোরিক এসিড দ্রবণের কাছে এবং অ্যামোনিয়াম হাইড্রোক্সাইড দ্রবণ থেকে দূরে অবস্থান করবে। কারণ হাইড্রোজেন ক্লোরাইড গ্যাসের (HCl) আণবিক ভর বেশি হওয়ায় এর ব্যাপন হার কম এবং ব্যাপন সময় বেশি তাই একটি একই সময়ে HCl গ্যাস কম দূরে অগ্রসর হয় । অপর পক্ষে NH3 এর আণবিক ভর কম হওয়ায় এর ব্যাপন হার বেশি এবং ব্যাপন সময় কম তাই একটি নির্দিষ্ট সময়ে NH3 গ্যাস বেশি দূরে অগ্রসর হয় । উল্লেখ্য যে উভয় গ্যাসের পর্যবেক্ষিত ব্যাপন সময় একই।

প্রশ্ন: নিঃসরণ কী?
সরু ছিদ্রপথে উচ্চচাপের স্থান থেকে কোনো গ্যাস নিম্নচাপের স্থানের দিকে সজোরে বেরিয়ে আসার প্রক্রিয়াকে নিঃসরণ বলে।
ফু দিয়ে ফোলানো বেলুনের গায়ে এক টুকরা স্কচটেপ নাগানো হল। এখন একটি আলপিন দিয়ে কচটেপের উপর দিয়ে বেলুনটিকে ছিদ্র করলে, বেলুনের ভিতরের সমস্ত বাতাস ছিদ্রপথ দিয়ে সজোরে বেরিয়ে গিয়ে বেলুনটি চুপসে যাবে । বেলুনের ভেতরে বাতাসের চাপ বেশি ছিল এবং বেলুনের বাইরে বাতাসের চাপ কম ছিল। তাই উচ্চচাপের প্রভাবে ছিদ্রপথ পাওয়ার সাথে সাথে বেলুনের বাতাস নিম্নচাপের স্থানের দিকে ধাবিত হয়েছে। এটি মূলত নিঃসরণ। অর্থাৎ সরু ছিদ্রপথে কোনো গ্যাসের অণুসমূহের উচ্চ চাপের স্থান থেকে নিম্নচাপের স্থানের দিকে সজোরে বেরিয়ে আসার প্রক্রিয়াকে নিঃসরণ বলে। তাপ প্রদান করলে ব্যাপনের মতো নিঃসরণের হারও বৃদ্ধি পায়।
প্রশ্ন: CNG কী?
CNG পূর্ণরুপ Compressed Natural Gas. যানবাহনে জ্বালানি হিসেবে সিএনজি CNG ব্যবহার করি। এটি মূলত উচ্চচাপে সংকুচিত মিথেন গ্যাস। যানবাহন চালানোর সময় এটি সিলিন্ডার থেকে সজোরে বেরিয়ে এসে ইঞ্জিনে প্রবেশ করে। অর্থাৎ এখানে নিঃসরণের ঘটনা ঘটে।
প্রশ্ন: বাসাবাড়িতে জ্বালানি হিসেবে সিলিন্ডারের কোন গ্যাস ব্যবহার করা হয় ?
বাসাবাড়িতে জ্বালানি হিসেবে সিলিন্ডারের প্রোপেন ও বিউটেন গ্যাস ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে মূলত প্রোপেন ও বিউটেন গ্যাসকে উচ্চচাপে সংকুচিত করে তরল অবস্থায় সিলিন্ডারে ভর্তি করা হয়। চুলা জ্বালানোর সময় যখন সিলিন্ডারের মুখ খুলে দেওয়া হয় তখন এটি গ্যাসে পরিণত হয়ে সজোরে বেরিয়ে আসে। অর্থাৎ এতেও নিঃসরণের ঘটনা পরিলক্ষিত হয়।

প্রশ্ন: গলন (Melting) কী?
তাপ প্রয়োগে কোনো পদার্থের কঠিন অবস্থা থেকে তরল অবস্থায় রূপান্তর করার প্রক্রিয়াকে গলন বলে।
প্রশ্ন: গলনাঙ্ক (melting point) কী?
1 বায়ুমণ্ডলীয় চাপে তাপ প্রদানের ফলে যে তাপমাত্রায় কোনো কঠিন পদার্থ তলে পরিণত হয়। সেই তাপমাত্রাকে উক্ত কঠিন পদার্থের গলনাঙ্ক বলে। প্রত্যেক বিশুদ্ধ কঠিন পদার্থের একটি নির্দিষ্ট গলনাঙ্ক থাকে। যেমন: 1 বায়ুমণ্ডলীয় চাপে বরফের গলনাক 0°C।
প্রশ্ন: স্ফুটন (Boiling) কী?
তাপ প্রয়োগে করে তরলকে গ্যাসে রূপান্তর করার প্রক্রিয়াকে স্ফুটন বলে।
প্রশ্ন: স্ফুটনাঙ্ক (Boiling point) কী?
1 বায়ুমণ্ডলীয় চাপে তাপ প্রদানের ফলে যে তাপমাত্রায় কোনো তরল পদার্থ গ্যাসীয় পদার্থে পরিণত হয় সেই তাপমাত্রাকে উক্ত তরল পদার্থের স্ফুটনাঙ্ক বলে। প্রত্যেক বিশুদ্ধ তরলের একটি নির্দিষ্ট স্ফুটনাঙ্ক থাকে। যেমন: 1 বায়ুমণ্ডলীয় চাপে পানির স্ফুটনাঙ্ক 100°C।
প্রশ্ন: ঘনীভবন (Condensation) কী?
বাষ্পকে শীতল করলে তা তরলে পরিণত করার প্রক্রিয়াকে ঘনীভবন বলে। স্ফুটনের বিপরীত প্রক্রিয়াটির নাম ঘনীভবন। স্ফুটনের জন্যে তাপ দিতে হয়, ঘনীভবনের সময় তাপ সরিয়ে নিতে হয়।
পাতন এবং ঊধ্বপাতন (Distillation and sublimation)
প্রশ্ন: বাষ্পেীভবন পাতন (Distillation) কী?
কোনো তরলকে তাপ প্রদান করে ঐ তরল পদার্থকে বাষ্পে পরিণত করার প্রক্রিয়াকে বাষ্পীভবন বলে। যেমন: চায়ের কাপে গরম চা রাখলে ঐ গরম চা থেকে পানি বাষ্পাকারে উড়ে যায়।
প্রশ্ন: ঘনীভবন কী?
বাষ্পকে শীতল করলে তা তরলে পরিণত করার প্রক্রিয়াকে ঘনীভবন বলে। যেমন: জলীয় বাষ্প তাপশক্তি নির্গত করে ঠাণ্ডা হয়ে পানিতে পরিণত হয়।
প্রশ্ন: পাতন (Distillation) কী?
কোনো তরলকে তাপ প্রদানে বাষ্পে পরিণত করে তাকে পুনরায় শীতলীকরণের মাধ্যমে তরলে পরিণত করার পদ্ধতিকে পাতন বলে। অর্থাৎ
পাতন = বাষ্পীভবন + ঘনীভবন (Distillation = Vaporization + Condensation)
প্রশ্ন: ঊর্ধ্বপাতন (sublimation) কী?
যে প্রক্রিয়ায় কোনো কঠিন পদার্থকে তাপ প্রদান করা হলে সেগুলো তরলে পরিণত না হয়ে সরাসরি বাষ্পে পরিণত হয়, সেই প্রক্রিয়াকে ঊর্ধ্বপাতন বলে।
উদাহরণ: নিশাদল (NH4Cl), কপূর (C10H16O), ন্যাপথলিন (C10H8), কঠিন কার্বন ডাই-অক্সাইড (CO2), আয়োডিন (I2), অ্যালুমিনিয়াম ক্লোরাইড (AlCl3) এই পদার্থগুলোকে তাপ প্রদান করা হলে সেগুলো তরলে পরিণত না হয়ে সরাসরি বাষ্পে পরিণত হয়।
প্রশ্ন: I2 ঊর্ধ্বপাতিত পদার্থ কেন?
যে প্রক্রিয়ায় কোনো কঠিন পদার্থকে তাপ প্রদান করা হলে সেগুলো তরলে পরিণত না হয়ে সরাসরি বাষ্পে পরিণত হয়, সেই প্রক্রিয়াকে ঊর্ধ্বপাতন বলে। I2 কে পদার্থগুলোকে তাপ প্রদান করা হলে তরলে পরিণত না হয়ে সরাসরি বাষ্পে পরিণত হয়। এজন্য I2 কে ঊর্ধ্বপাতিত পদার্থ বলা হয়।
প্রশ্ন: ন্যাপথলিনকে ঊর্ধ্বপাতিত পদার্থ কেন?
যে প্রক্রিয়ায় কোনো কঠিন পদার্থকে তাপ প্রদান করা হলে সেগুলো তরলে পরিণত না হয়ে সরাসরি বাষ্পে পরিণত হয়, সেই প্রক্রিয়াকে ঊর্ধ্বপাতন বলে। ন্যাপথলিন কে তাপ প্রদান করা হলে তরলে পরিণত না হয়ে সরাসরি বাষ্পে পরিণত হয়। এজন্য ন্যাপথলিন কে ঊর্ধ্বপাতিত পদার্থ বলা হয়।